আগুনে পুড়ে ছাই চুনতি আশ্রয়ন প্রকল্পের ১০ টি ঘর

সুদেব দে,লোহাগাড়া প্রতিনিধিঃ

১৮ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে চুনতি ১নং ওয়ার্ডস্থ আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।
আশ্রয়ন প্রকল্পের ১ নং ব্লকের বাসিন্দা ফরিদুল আলমের রান্নাঘরের গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য জমির উদ্দিন বাবর নিশ্চিত করেন।

অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থরা হল যথাক্রমে মৃত নূর আহমদের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন, মৃত ইব্রাহিমের পুত্র মোঃ শাহ আলম,নুরুল কাদেরের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম,মৃত মোঃ কাশেমের পুত্র
আবুল বশর, মৃত ছরওয়ারের স্ত্রী আয়েশা বেগম , মৃত আবুল হোসেনের স্ত্রী মাবিয়া বেগম , মৃত লালমিয়ার পুত্র ফরিদুল আলম প্রকাশ বৈদ্য ফরিদ,মৃত মোজাহের আহমদের পুত্র আবু তাহের, মৃত নজু মিয়ার পুত্র আবুল কালাম, মৃত আব্দুস ছালামের পুত্র আব্দুল আমিন। অগ্নিকান্ডে নগদ টাকা,স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ আনুমানিক ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থরা জানান।

স্থানীয়রা জানান, ফরিদুল আলমের বাড়ির রান্না ঘরের গ্যাসের চূলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহুর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের পুকুরে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় আগুন নিভাতে সময় লেগেছে। ততক্ষণে ১০ টি বাড়ির সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়েগেছে। আগুন থেকে কিছুই রক্ষা করা যায়নি বলেও তারা জানান।
ক্ষতিগ্রস্থ মাহমুদা খাতুন বলেন, আর্দশ গ্রাম চালু হওয়ার পর থেকে পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস করছি। সারা জীবনের সঞ্চিত সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। মৃত ছরওয়ারের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান,ছেলেকে ইটভাটায় কাজে পাঠিয়ে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম, আগুন আমার সবকিছু পুড়ে ছাই করে ফেলেছে,আগুন থেকে টাকাটাও রক্ষা করতে পারলামনা৷আবুল কালাম বলেন,ফ্রিজের কিস্তি,সাপ্তাহিক কিস্তির জন্য রাখা নগদ সাড়ে ৫ হাজার টাকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সবকিছু আগুনে ছাই হয়েগেছে।আবু তাহের বলেন, রমজান ও ঈদে খরচের জন্য অনেক কষ্টে ২২ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। আগুনে জমানো সব টাকা ও দেড়ভরি স্বর্ণালংকারসহ আমার সবকিছু শেষ।আনোয়ারা জানান, বাড়িতে কাপড় সেলাই করে অনেক কষ্টে সংসার চালায়। ঈদে সেলাই করে বিক্রি করার জন্য চুনতি বাজারের টুনু সওদাগর থেকে বাকি করে ২৫ হাজার টাকার কাপড় এনেছিলাম। আগুনে সবকাপড় পুড়ে গেছে।

আগুন লাগার খবর পেয়ে সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জুলহাস উদ্দিনসহ ফায়ার সার্ভিসের ২ টি ইউনিট প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১ নং কলোনির ১০ বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোঃ আহসান হাবীব জিতু, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) মুহাম্মদ মাহবুব আলম শাওন ভুঁইয়া,চুনতি ইউপি চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন জনু কোম্পানী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদুর রহমান রিয়াদ।

এসময় তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলো কে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ টাকা ও কম্বল প্রদান করেন ইউএনও মোঃ আহসান হাবীব জিতু।

এছাড়াও চুনতি ইউপির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন জনু কোম্পানীর নিজস্ব তহবিল হতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য থাকার এবং খাবারের ব্যবস্হা ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।

চুনতি ইউপি চেয়ারম্যান বলেন অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছি এবং প্রাথমিকভাবে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.