চট্টগ্রাম ব্যুরো: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও শঙ্কিত। তবে এই সংশয় সমাধানের দায়িত্ব বাংলাদেশের মানুষকে নিতে হবে।’
রোববার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে নগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যারা বাংলাদেশের নাগরিক, আমাদের ভবিষ্যত, বাংলাদেশের ভবিষ্যত, গণতন্ত্রের ভবিষ্যত, দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার সেগুলো ফিরে পাবে কিনা সেটা নিয়ে অনেকের মধ্যেই সংশয় কাজ করছে। দেশের ভেতরে তো আছেই, বাইরে যারা গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে, বাংলাদেশের বিদেশি বন্ধু যারা আছে, বিশ্বের গণতন্ত্রকামী সকল মানুষের মনেও এই সংশয় কাজ করছে।’
রোববার দুপুরে অনুষ্ঠিত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের একটি সভা হয়েছে। তারাও এই ব্যাপারে অর্থাৎ বাংলাদেশের গণতন্ত্র, আগামী নির্বাচন, মানবাধিকার, আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে শঙ্কিত। আগামী দিনের বাংলাদেশ কী ধরণের হতে পারে এবং কোনদিকে যাচ্ছে, এটা নিয়ে সবার মনে সংশয়। তবে এর সমাধানের দায়িত্ব বাংলাদেশের মানুষকে নিতে হবে। মূলত বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে। সবচেয়ে বড় দায়িত্ব জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীদের নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যারা দেশের বাইরে ও ভেতরে আছেন সবাই আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা বীরত্বের সঙ্গে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে, বিশ্বের মানুষের কাছে এই বার্তা দিয়েছে যে, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের ব্যাপারে কোনো আপসের সুযোগ নেই। সরকারকে বিদায় দেওয়া ছাড়া বাংলাদেশে যে সংকটগুলো দেখা যাচ্ছে, সেখান থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের জন্য আমাদের আগামী দিনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।’
সরকার ও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো রাজনৈতিক অবস্থান এখন আর নেই। আওয়ামী লীগ বলে যে দলটি ছিল, সেটা সম্পূর্ণভাবে শেখ হাসিনা ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজনীতি থেকে অনেক দূরে সরে চলে গেছে। তাদের গত ১৪ বছরে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে কীভাবে রাতের আঁধার ভোট চুরি করতে হয়, টেন্ডারবাজি, জায়গা দখল, দুর্নীতি করতে হয়। তাই তারা রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’
নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলার আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।