চন্দনাইশের ২৫ অবৈধ ইটভাটা বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ

পরিবেশের ক্ষতি করার কারণ ও হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় ২৫টি অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর সেই আদেশ অমান্য করায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সাত কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এসব ভাটা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আইনগত প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করা হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ছাড়া লিগ্যাল নোটিশে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক, চন্দনাইশ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিবাদী করা হয়। বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচএফ) এর পক্ষে রোববার (২১ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজি রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান।

লিগ্যাল নোটিশে উচ্চ আদালত হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ওই এলাকার পরিবেশের ক্ষতি করার কারণে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ২০১৯ সালের করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল। এছাড়া সম্প্রতি হাইকোর্টের গত ১ মার্চ ঢাকার আশপাশের জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন। ওই সব রায়ের আলোকে এসএবি ইটভাটাসহ ২৫টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।

২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর সাত দিনের মধ্যে চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে একই সালের ২৯ নভেম্বর করা রিটে ওই আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এ আদেশসহ অবৈধ ইটভাটা বন্ধ আরও অনেকগুলো আদেশর কথা নোটিশে উল্লেখ করে বলা হয়, সম্প্রতি হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন চন্দনাইশ উপজেলা পরিদর্শন করে দেখেছে সেখানে ২৫টি অবৈধ ইটভাটা ব্যবসা পরিচালনা করেছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, ১২ মার্চ মোবাইলকোর্ট অবৈধ ইটভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। বন্ধের পরিবর্তে এ জরিমানা হাইকোর্টের আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিজ্ঞাপন

তাই অবিলম্বে ওই ২৫ ইটভাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হচ্ছে। আরও এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় হাইকোর্ট বিভাগে আদালত অবমাননার অভিযোগ বা রিট দায়ের করা হবে।

জানা গেছে, ১৯ মার্চ চন্দনাইশের ৮০ শতাংশ ভাটাই অবৈধ শীর্ষক দেশের এক দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, চন্দনাইশে বৈধ ও অবৈধ ইট ভাটা রয়েছে ৩১টি। এর মধ্যে ছয়টি বৈধ ও ২৫টি অবৈধ।

এসব ইট ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমোদন নেই। ইট ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের তোয়াক্কা না করে ভাটার মালিকরা অবৈধভাবে বছরের পর বছর ইট পোড়ানো অব্যাহত রেখেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসন সাময়িক জরিমানা করলেও পরে মালিকরা সবাইকে ম্যানেজ করে ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচএফ) চন্দনাইশ ইট ভাটার ওপর সম্প্রতি একটি জরিপ চালিয়েছে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.