কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত ও জুতার মালা পরিয়ে এলাকাছাড়া করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা ও পৌর বিএনপি। এ সময় তারা দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে। এতে বিএনপির স্থানীয় নেতারা অংশ নেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্যে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ বলেন, “আমরা কোনও দুষ্কৃতকারী এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রতিবাদ করছি না। আমাদের প্রতিবাদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে যারা অপমান করেছে তাদের বিরুদ্ধে।”
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা বলেন, “বিজয়ের মাসে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে অপমান করে তারা সারা দেশ এবং চৌদ্দগ্রামবাসীকে কি মেসেজ দিলেন? ফ্যাসিবাদী আমলের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় হত্যা, গুম, লুণ্ঠনের বাইরে বাকি ছিল শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় জুতার মালা পরিয়ে অপমান-অপদস্থ করে গ্রামে-গ্রামে হাঁটানো।”
তিনি বলেন, “আজ তারা ফ্যাসিবাদের বাকি কাজগুলোও শেষ করছেন? তার অন্যায় থাকলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন, আদালত তার বিচার করবে। কিন্ত এভাবে নিজেদের হাতে আইন তুলে নেওয়া মোটেও ঠিক নয়।”
প্রসঙ্গত, গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করেন স্থানীয় কয়েকজন। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই এলাকার জামায়াতের সমর্থক প্রবাসী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একদল লোক এ ঘটনা ঘটান।
এদিকে এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু উপজেলার লুদিয়ারা এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের রোষানলে পড়ে দীর্ঘ ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলেন তিনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।