বাঁশখালীর সাধনপুরের লটমনি মৌজা’র ইটভাটায় যাচ্ছে এওচিয়ার পাহাড়ের মাটি-
লাগোয়া হলেও সীমানা ভাগের আইনী চক্রে বেঁচে যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটার ৪ মালিকরা
সাতকানিয়া প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিমে এওচিয়ার ছনখোলার উত্তর পার্শ্বে সাধনপুর ইউনিয়নের লটমনি মৌজার অন্তত ৫টি অবৈধ ইটভাটার মাটি যায় একই স্পটে অবস্থিত হারুনের এইচবিএম ইটভাটা, নুরুল আলম কোম্পানীর ওয়ানস্টার ইটভাটা,ASC ইটভাটা ও জামাল কোম্পানির জেবিএম ইটভাটা।
এদিকল ASC ইটভাটার মালিক মোর্শেদ কোম্পানি থেকে পরিবর্তন হয়ে লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদের শাহআলম কোম্পানির হাতে গিয়ে নতুন করে প্রোডাকশনে গেছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
মূলত ASC ইটভাটায় পাহাড় কাটা সংশ্লিষ্ট বার বার অভিযোগ ওঠায় পরিবেশের স্বার্থে মোর্শেদ কোম্পানি ছেড়ে দিয়েছেন বলেও প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন একাধিক সূত্র।
ওয়ান স্টার,ASC,HBM,JBM ইটভাটা গুলি ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে এওচিয়া ইউনিয়নে ছনখোলা যা ইট ভাটা গড়ে ওঠেছে ওগুলোর সাথে পাশাপাশি হলেও লোকেশনটা পার্শ্ববর্তী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের লটমনি মৌজায় পড়ায়, তারা দেদারসে এওচিয়ার পাহাড়কেটে ইট বানিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন এওচিয়ার পাহাড়কাটা দেখে এওচিয়ায় অবস্থিত ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করলেও প্রশাসনিক এখতিয়ার সম্পন্ন এলাকার বহির্ভূত হওয়ায় উপরোক্ত উল্লেখিত লটমনি মৌজার ইটভাটায় অভিযান চালাতে পারেননা।
ওই ৪টি অবৈধ ইটভাটায় পরিবেশ কিংবা উপজেলা প্রশাসন পাহাড়কাটা কিংবা টপসয়েল কাটা বা লাইসেন্স সংক্রান্ত যে কোন আইনী ঝামেলায় বার বার সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন থেকে বেঁচে যাওয়ায় বেপরোয়া ভাবে এওচিয়ার পাহাড় কেটে যাচ্ছে।
আর এদিকে উল্টো সেই পাহাড় কাটার খেসারত দিতে হচ্ছে এওচিয়ার ছনখোলা চূড়ামনির ইটভাটার মালিকদের।
এ যেন এওচিয়ার পাহাড়ের মাটি পুড়ছে বাঁশখালীর লটমনির ইটভাটায় উল্টো জরিমানা গুনতে হয় স্থানীয়দের।
এদিকে এমন দোটানা -সুবিধাভোগী ইটভাটাগুলি ঘুরে ঘুরে দেখার সময় ইটভাটার মালিকরা বুকফুঁলিয়ে বলেন (আপনারা) সাংবাদিকরা কি সাতকানিয়া উপজেলার? নাকি বাঁশখালী উপজেলার সেটা জানতে চেয়ে সাতকানিয়ার হলে তারা উচ্চস্বরে বলেন আমাদের ভাটা অবস্থিত বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত,তাই সাতকানিয়ার সাথে আমাদের প্রশাসনিক কোন ঝামেলা নেই।
আবার বাঁশখালীর সাংবাদিকরা তথ্যের জন্য ওই ৪ ইট ভাটায় আসলে তারা(ইটভাটার মালিক) বলেন, আমাদের -ইটভাটা বাঁশখালীতে অবস্থিত হলেও ভাটার মাটি কিন্তু আমরা সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়ন থেকে সংগ্রহ করে থাকি তাই বাঁশখালীর প্রশাসন কিংবা অন্য কোন দপ্তর পাহাড়কাটার বিষয়ে আমাদের জরিমানা করার আইনগত এখতিয়ার রাখেনা।
কিন্তু বাস্তবে ইটভাটাগুলি বাঁশখালীর লটমনি মৌজার হলেও সাতকানিয়ার এওচিয়ার অপরাপর ইটভাটাগুলির একই জোনে অবস্থিত।
অর্থাৎ ইটভাটাগুলি একই এরিয়ায় হলেও খতিয়ানগত ভিন্ন দুইটি উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের আলাদা সম্পত্তি তবে একই জোনে তাদের(সব ইটভাটা) সবার লোকেশন।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদুল ইসলাম বলেন-হ্যাঁ ওদের বিষয়টা আমার নজরে আছে ইতিমধ্যে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি।
এবং অবৈধ একটি ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছি।
বাকিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এওচিয়ার ছনখোলার একটি ইটভাটার মালিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন,লটমনি মৌজার ভাটাগুলি আমাদের এরিয়ায় তাই তারা পাহাড় কাটলে সাংবাদিকরা আমাদের বিরুদ্ধে করে নিউজ এবং তারা এওচিয়া থেকে পাহাড় কেটে নিয়ে গেলেও সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন তাদেরকে জরিমানা করতে পারেনা মৌজা ভিন্ন তাই,পরে তাদের ক্ষোভের বলির পাঠাঁ হতে হয় আমাদের।
এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ASC এর মালিক শাহআলম কোম্পানি লোহাগাড়া উপজেলার প্রসিদ্ধ একজন নামকরা পাহাড়খেকো, তার লোহাগাড়ার ইটভাটার নিউজ সংগ্রহ করতে গিয়ে একবার লোহাগাড়ার এক স্থানীয় সাংবাদিককে লাঞ্চিত হতে হয়েছিল।
সেই লাঞ্চনার কথা মাঝে মাঝে চূড়ামণির লটমনি মৌজায় ASC ইটভাটার কার্যক্রমে বলে বেড়িয়ে এওচিয়া ইউনিয়নের পাহাড় কাটার বৈধতা খুঁজতে চায় এই শাহআলম কোম্পানি।
এদিকে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা প্রয়োজনে বাঁশখালীর সাথে কথা বলে যৌথ অভি্যানে যাব একসাথে তবুও ওই ৪টি ইটভাটাকে আইনের আওতায় আনবো।