পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হাতিয়ারঘোনা এলাকায় সরকারি বরাদ্দে চলমান খাল-সংস্কার কাজ এক যুবলীগ নেতার চাঁদা দাবির অভিযোগে বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার সকালে এঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের দাবি, কাজীর খালের ভাঙন প্রতিরোধ এবং আশপাশের কৃষিজমি রক্ষার্থে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে হাতিয়ারঘোনা কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে ডান তীরে কাজীর খালের ভাঙ্গন প্রতিরোধে এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এ প্রকল্পে স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল আবছারের(৩৫) নেতৃত্বে কয়েক জন বিশ হাজার টাকা
চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সে উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা গ্রামের আবদুল সবুরের ছেলে। ইতিপূর্বে সে ৫ আগস্ট পরবর্তী মামলাসহ একাধিক মামলায় কয়েক দফা গ্রেপ্তার হয়েছে বলে পটিয়া থানা সূত্রে জানা যায়।
স্থানীয় কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, খালের ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাওয়ায় বছরের পর বছর তাদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের বরাদ্দে কাজ শুরু হওয়ায় তারা স্বস্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু চাঁদাবাজির অভিযোগে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা আবারও উদ্বেগে পড়েছেন। সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ খাল-সংরক্ষণ প্রকল্পে চাঁদা চাওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসী দ্রুত কাজ পুনরায় শুরু এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।
স্থানীয় কৃষক বুদরুচ মিয়া জানান,
যুবলীগ নেতা আবছারের কোন বৈধ পেশা নাই । গত ১৫ বছর পটিয়ার সাবেক এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে সে প্রভাব কাটিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে। সে ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক ছিল। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি সহ প্রায় ১৫ টির অধিক মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। তার নেতৃত্বে হিলচিয়া ও হাতিয়ারঘোনা গ্রামে একটি কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়।
মো: সুমন নামে আরেক সচেতন নাগরিক বলেন, আবছারের নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজি,চুরি চামারি, টাকার বিনিময়ে মানুষের জমি দখল বেদখল ইত্যাদি নানা অপরাধ মূলক কাজে জড়িত। তার গ্রুপে রয়েছে তৈয়ব,মনসুর, মানিক,সাকিব সহ ১০ থেকে ১২ জন সদস্য। তারা গত ১৫ বছর
সামশুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নেওয়া আবদুল মোনাফের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে এসব অপকর্ম করছে।
উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, “সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি ও চাঁদা দাবির অভিযোগ গুরুতর। আমরা বিষয়টি যাচাই করছি। প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”