মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
“ঋষিযুগ নাই বলে না ভাবিও মনে, আসিতেছে স্বর্ণযুগ যুগ আবর্তনে” চট্টগ্রামের শ্রীঙ্গন খ্যাত বাঁশখালীর ঋষিধামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ সনাতনী দ্বাবিংশতম ধর্মীয় সমাবেশ ঋষিকুম্ভ ও কৃম্ভ মেলা।
আগামী ২৩ জানুয়ারী শুক্রবার সকাল ৮ টায় বাঁশখালীর ঋষিধাম প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য মহাশোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হবে মেলা।
প্রতিবারের মতো সব ধর্মের সমন্বয় সাধন, অভ্যাস ও বৈষম্যের মাহাত্ম্য সংসারে পীড়িত জীবকে শিক্ষা দেয়া এবং ধর্মজগতের কল্যাণসাধন, পরস্পরের মধ্যে সদ্ভাব আদান-প্রদানে অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করবে এ- মেলা।
রবিবার ১৬ নভেম্বর সকালে ঋষিধাম প্রাঙ্গনে ২২ তম আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভ মেলা ২০২৬ সালের এক প্রস্তুতি সভা শ্রীগুরু সংঘের সভাপতি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব চন্দন সিনহার সভাপতিত্বে, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করেন শ্রীমৎ স্বামী নিরঞ্জনানন্দ পুরী মহারাজ, ঋষিধাম ও তুলসীধামের পূজনীয় মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সচ্চিদানন্দ পুরী মহারাজের পৌরহিত্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঋষি অদ্বৈতানন্দ পরিষদ বাংলাদেশ সভাপতি বাবু দেবাশীষ পালিত, ঋষি অদ্বৈতানন্দ পরিষদ বাশখালী শাখার সভাপতি অলক দাশ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ৫নং কালিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আমিনুর রহমান চৌধুরী ও বর্তমান (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) মোহাম্মদ আবুল, শ্রীগুরু সংঘ সাধারণ সম্পাদক বিমল দেব, শ্রীমৎ স্বামী কৃপানন্দ পুরী মহারাজ, শ্রীমৎ স্বামী অক্ষরানন্দ পুরী মহারাজ, শ্রীমৎ স্বামী হরিকৃপানন্দ পুরী সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। পরবর্তীতে এডভোকেট অনুপ বিশ্বাস কে সভাপতি, শ্রী চন্দ্র শেখর মল্লিককে সাধারণ সম্পাদক ও তড়িৎ কান্তি গুহ কে অর্থ সম্পাদক হিসেবে কমিটি ঘোষণা করেন ঋষিধাম ও তুলসী ধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ সচ্ছিদানন্দ পুরী মহারাজ।
২২ তম আন্তর্জাতিক ঋষি কুম্ভ ও কুম্ভ মেলা উদযাপন পরিষদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ সচ্ছিদানন্দ পরী মহারাজের পৌরহিত্যে আসন্ন ২৩ জানুয়ারি-থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১ দিনব্যাপী চলবে কুম্ভমেলার ব্যাপক অনুষ্ঠান ও মাঙ্গলিক আয়োজনে দেশ-বিদেশের প্রায় ২০ লক্ষাধিক ভক্ত জনতার সমাবেশ ঘটবে এবারের মেলায়। প্রতিবারের মত এবারেও এই মেলায় অংশ নেবেন- দেশ-বিদেশের সাধারণ পর্যটকসহ সাধু সন্যাসী, ঋষিকুল ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব।
আগামী ২৩ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঋষিকুম্ভ মেলার মূল আকর্ষণ আন্তজার্তিক ঋষি সম্মেলন। ভারত বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন অঞ্চলের মঠ-মন্দিরের মহাত্মা মহারাজবৃন্দরা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। বিভিন্ন দিনের অনুষ্ঠানসূচিতে এই মেলায় অংশ নেবেন রাষ্ট্রীয় অতিথিরা।
প্রসংগত, যারা দূরদূরান্ত থেকে ভারতের এই চারটি স্থানে গিয়ে তীর্থ করতে অক্ষম, তাদের কথা বিবেচনা করে বাঁশখালী ঋষিধামের প্রতিষ্ঠাতা মোহন্ত শ্রীমৎ অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ ১৯৫৭ সাল থেকে এখানে কুম্ভমেলার প্রবর্তন করেছিলেন। ভারতের ৪টি স্থানের যেকোনো একটি মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার এক বছর পর বাংলা মাঘ মাসের ত্রয়োদশী তিথিতে বাঁশখালীর ঋষিধামে কুম্ভ মেলা বসে।