চট্টগ্রামে করোনায় বেশি মারা যাচ্ছেন ৫১ বয়সের ঊর্ধ্বে ব্যক্তিরা

এছাড়া গ্রামের চেয়ে করোনায় বেশি মারা যাচ্ছেন নগরের বাসিন্দারা। নারীদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি আক্রান্ত এবং মারা যাচ্ছেন পুরুষ।

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে শনিবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত এ তথ্য জানা গেছে। খবর – জাগো নিউজের।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে তথ্য জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেলায় এ পর্যন্ত ৭১১ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৫৬৭ জনেরই বয়স ৫১ বছরের ঊর্ধ্বে। শতকরা হিসাবে যা মোট মৃত্যুর ৭৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

শূন্য থেকে ২০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ১০ জন, যা শতকরা হিসাবে এক দশমিক ৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ৪৩ জন, যা শতকরা হিসাবে ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন, যা শতকরা হিসাবে ১২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫৯ হাজার ৯৯৯ জন। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫০ বছরের আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৩৫ জন, যা শতকরা হিসাবে ৬১ দশমিক ১৪ শতাংশ। শূন্য থেকে ২০ বছরের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮ জন, শতকরা হিসাবে ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এছাড়া ৫১ থেকে এর ঊর্ধ্বের বয়সী আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ২৭৬ জন, শতকরা হিসাবে যা ২৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের ৪৬ হাজার ৭৪৪ জন নগরের বাসিন্দা এবং ১৩ হাজার ২৫৫ জন উপজেলার বাসিন্দা। শতকরা হিসাবে নগরে ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং জেলায় ২২ দশমিক ১ শতাংশ লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া জেলায় এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৭১১ জন। এদের মধ্যে নগরে মারা গেছেন ৪৭৯ এবং বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২৩২ জন।

এদিকে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট পুরুষ আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৮১৮ এবং মারা গেছেন ৪৮৫ জন। বিপরীতে নারী আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ১৮১ এবং মারা গেছেন ২২৬ জন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘মধ্য বয়সী লোকজন স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিভিন্ন কাজে বের হচ্ছেন; তাই তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু তারা বেশি আক্রান্ত হলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় বয়স্কদের চেয়ে কম মারা যাচ্ছেন। উল্টো মধ্য বয়সীরা বাইরে থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বয়স্কদের সংক্রমিত করছেন। কিন্তু পরিসংখ্যানে বয়স্করা মধ্য বয়সীদের চেয়ে কম আক্রান্ত হলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশি। শতকরা হিসাবে ৫১ থেকে ঊর্ধ্বে বয়সীদের মৃত্যুর হার প্রায় ৮০ শতাংশ।’

গ্রাম এবং শহরের আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারের ব্যবধানের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুরুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটি ক্ষেত্রেই প্রায় ৯০ শতাংশ শহর এবং মাত্র ১০ শতাংশ গ্রামের বাসিন্দা ছিল। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে ততই গ্রামের মানুষ বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করছেন। বিশেষ করে করোনার টিকা প্রদানের শুরুতে ভয়ে গ্রামের মানুষ টিকা কম নিয়েছেন। তাই এখন দিন দিন শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি আক্রান্ত এবং মারা যাচ্ছেন।’

নারীদের চেয়ে পুরুষের বেশি আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার বিষয়ে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘নারীদের চেয়ে পুরুষদের বিভিন্ন কাজে বেশি বের হতে হয়। তাই পুরুষরা বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.