যৌতুক না দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম

 

 

 

বাঁশখালী চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে যৌতুক না দেওয়ায় শারমিন আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শারমিন আক্তারের স্বামী মোঃ নুরুল আবচার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে।

পারিবারিক ও অভিযোগ সূত্রে জানান যায়, ২০১৭ সালে উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুর রশিদ এর ছেলে মোঃ নুরুল আবচারের সঙ্গে একই উপজেলার বৈলছড়ী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের চৌকিদার পাড়া এলাকার মোহাম্মদ পেয়ারুর মেয়ে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি পুত্র সন্তান শাহারিয়ার মোহাম্মদ আবরার (৮) জন্মগ্রহণ করে। বিগত কয়েক বছর তারা সুখে শান্তিতে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করিলেও পরবর্তীতে শারমিনকে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। বিয়ে ও বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে শারমিন আক্তারের বাবা নগদ ১ লাখ টাকা ও ফার্ণিচার সহ তিন ভরি সোনার গয়না যৌতুক হিসেবে নুরুল আবচারকে দেয়। পরবর্তীতে কয়েক মাস পূর্বে তাকে পুনরায় যৌতুকের দাবীতে গুরুতর মারধর করিয়া ঘর থেকে বাহির করিয়া দিলে শারমিন বাদী হয়ে গত ২৯ জুলাই ২৪ইং বাঁশখালী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর -১১২৩ মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় আদালত আসামী নুরুল আবচারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে । পরবর্তীতে আসামী বিজ্ঞ আদালতে আপোষ মীমাংসার শর্তে জামিনে মুক্তিলাভ করে। উক্ত আপোষ নামায় বৈঠকে আসামী নুরুল আবচার তার স্ত্রীকে ভবিষ্যতে যৌতুকের দাবীতে মারধর ও অত্যাচার নির্যাতন করিবে না মর্মে একখানা লিখিত অঙ্গীকারনামা প্রদান করায় উভয়ে আদালতে আপোষনামা দাখিল করে। এরপর থেকে তারা পুনঃরায় সংসার শুরু করে। কিন্তু কিছুদিন নিরব থাকিলেও পরবর্তীতে পুণঃরায় ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবীতে আবার জ্বালা নির্যাতন অব্যাহত থাকে। গত বুধবার সন্ধ্যায় আবার ও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক আনিয়া দিতে বলে স্ত্রীকে। সে অপারগতা প্রকাশ করিলে স্বামী নুরুল আবচার উত্তেজিত হইয়া ধারালো দা দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথার খুলিতে কোপ মেরে গুরুতর রক্তাক্ত হাঁড়কাটা জখম করে রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় মাটিতে পড়িয়া গেলে তার ছেলে মোবাইল ফোনে নানার বাড়িতে খবর দেয়। পরে তারা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার শারমিন আক্তার বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ৫০ হাজার যৌতুক দাবি করে আমার ওপর হামলা চালানো হয়। পরে আমার রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে স্থানীয় ও আমার পরিবারের লোকজন এসে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে আমার মাথায় ৮ টি সেলাই দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক
ডাঃ সৌরভ বলেন, যেভাবে উপর্যপুরি কোপানো হয়েছে তা হত্যার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। মাথার টিক মাঝখানে থাকে কোপ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৮ টি সেলাই পড়েছে। প্রসূতি একজন মাকে এভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে যা চিন্তা করাও যায় না।

এ দিকে এ ঘটনায় বাঁশখালী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।

 

 

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.