সাতকানিয়ায় খাবার হোটেলের আড়ালে চলছে রমরমা দেহব্যবসা

মাসোহারা যায় বিভিন্ন দপ্তরে, বাদ নেই এক শ্রেণির সাংবাদিকও

সৈয়দ আক্কাস উদ্দীন:

বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই ভেতরে কি হচ্ছে। আর যাবেই বা কি করে, কারণ বাইরে চকচকে সাইনবোর্ড টাঙানো, যাতে বড় বড় হরফে লেখা হোটেল ফ্যান্টাসি এন্ড মিনি চাইনিজ। কিন্তু সেই খাবার হোটেলের আড়ালেই চলছে দেহব্যবসা।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের শিশুতল এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হোটেল ফ্যান্টাসি। খাবার হোটেলের নামে পরিচিতি থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে চলে আসছে অনৈতিক কাজ। প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে রমরমা এই দেহ ব্যবসা। আর এই অবৈধ পতিতালয়ে উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের আনাগোনা বেশি। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের। এতে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

হোটেল ফ্যান্টাসি এন্ড মিনি চাইনিজ এর ভিতর বেশ কয়েকটি কেবিন ঘর তৈরী করা রয়েছে। অন্ধকার ও পর্দায় ঢাকা এসব ছোট্ট কক্ষেগুলোতে উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীদের অবাদে মেলামেশার সুযোগ করে দিয়ে বাড়তি আর্থিক সুবিধা নেওয়া হচ্ছে।

আর এ দেহব্যবসার মাসোহারা যায় বিভিন্ন দপ্তরে, বাদ নেই এক শ্রেণির সাংবাদিকও। নিয়মিত যোাগাযোগ রেখে নিজেদের পকেট ঠিক রেখে অনৈতিক এ কাজকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছেন।

সম্প্রতি অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে সেখানে যায় চট্টগ্রাম সংবাদ টিম। নিচতলার গেটে ঢুকতেই দেখা গেল ম্যানেজারকে। ভিতরে ঢুকতেই দেখা গেল আলাদা আলাদা কক্ষ। ততক্ষণে চট্টগ্রাম সংবাদ টিম আসার খবরে ছোটাছুটি শুরু হয় খদ্দের আর পতিতাদের। এক পতিতা ঢুকে পড়েন রান্নাঘরে আর খদ্দের উপর তলায় চলে যান। এখানে কি কাজে এসেছেন জানতে চাইলে ওই মেয়ে এই হোটেলে রান্নার কাজ করেন বলে জানান। আর উপর তলায় উঠে যাওয়া যুবককে জিঙ্গেস করলে সে এখানে কফি খেতে এসেছেন বলে জানায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সকল অবৈধ দেহ ব্যবসায় জড়িতরা ভ্রাম্যমাণ পতিতা। এদের বড় ধরনের নেটওর্য়াক আছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে এই অবৈধ ব্যবসা করেন।

হোটেলটিতে সরেজমিনে পরিদর্শনের ভিডিও রেকর্ড এই নিউজের প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। অথচ ফ্যান্টাসি নামক এই খাবার হোটেলটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। খাবার হোটেলর নামে দিনের পর দিন চলছে এই রমারমা দেহ ব্যবসা। এখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া উঠতি বয়সী তরুণসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের আনাগোনা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, রেস্টুরেন্টটিতে স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের আনাগোনা অনেকাংশে বেশী। এছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে নানা শ্রেণি পেশার নারী-পুরুষরা এখানে এসে টাইম পাস করেন। রেস্টুরেন্টে খাবার দাবার অর্ডারের নামে খুপড়ি ঘরে চলে তরুণ-তরুণী কপোত কপোতির অনৈতিক কর্মকান্ড। অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য রেস্টুরেন্টের খুপড়ি ঘরগুলো তাদের কাছে নিরাপদ স্থান। এ সুযোগে রেস্টুরেন্ট মালিকও আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। অবিলম্বে এসব অনৈতিক কাজ বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

খাবার হোটেলের নামে এই অবৈধ পতিতালয়ের ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে হোটেলের ম্যানেজার মোঃ ইমাম হোসেন এই নিউজ না করার জন্য প্রতিবেদকে অনুরোধ করেন। এবং এখানে কারা আসে জানতে চাইলে নির্দিষ্ট শ্রেণির কাস্টমার আসে বলে জানান তিনি।

রেস্টুরেন্টের ভিতরে আলাদাভাবে পর্দাঢাকা ঘর রাখা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

জানা যায়, মোঃ ইমাম হোসেনের বাড়ি নোয়াখালীতে। দীর্ঘ দিন ধরে আপন ভাতিজাসহ সাতকানিয়ায় এ কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা-তোজ-জোহরা বলেন, শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছে সাতকানিয়া থানা পুলিশ।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.