চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষার্থী রোকেয়া খাতুন ওরফে রুকুকে চাপ প্রয়োগ এবং স্বামী কাউসারের শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের কারণেই আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রোকেয়ার পরিবারের।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সিভয়েসের কাছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন রুকুর বড় ভাই আল আমিন সরকার বিপুল।
তিনি বলেন, আমার বোনটা নিষ্পাপ ছিল। সে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বাও ছিল। রুকু গর্ভপাত করাতে চায়নি। কাউসার জোর করে তাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেছে। এরপর কাউসার ঢাকা থেকে রুকুর ক্যাম্পাসে গিয়ে ওকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। যেটার প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়েরই বহু শিক্ষার্থী। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলেও এর প্রমাণ মিলবে।
এর আগে ৮ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে না পারাকে আত্মহত্যার মূল কারণ হিসেবে সিভয়েসকে বক্তব্য দিয়েছেন বিপুল। তার কারণ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমার বোনের লাশটাকে কষ্ট না দেওয়ার জন্য আমরা তখন কিছু বলিনি বা বিচার চাইনি। পোস্টমর্টেম করলে লাশ কাটা ছেটা করবে, তা আমি চাইনি। বোনের লাশ নিয়ে বাড়ি যাওয়াটাই ছিল তখন মূল কাজ। তাই সত্যটা হয়তো গোপন করেছি। কিন্তু জোর করে গর্ভপাত ও স্বামীর নির্যাতনের কারণেই আমার নিষ্পাপ বোনটা আত্মহত্যা করেছে। আমার বোনের স্বামী খুনি। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, রুকুর পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। রুকুর পরিবার যদি এর বিচার চায়, সেক্ষেত্রে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আমরা এর ব্যবস্থা নিব।
ছাত্রী হলের সামনে স্বামী কাউসার কর্তৃক রুকুকে শারিরীক নির্যাতনের বিষয়ে প্রক্টর আরও বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে অভিযোগটি শুনেছি। কিন্তু আমরা এখনো স্পষ্ট প্রমাণ পাইনি। কারো কাছে ওরকম কোনো প্রমাণ থাকলে সে যেন আমাদেরকে দেয়। পাশাপাশি আমরা সিসিটিভি ফুটেজও চেক করতেছি। যদি এরকম কোনো ঘটনা থাকে, তাহলে অবশ্যই তা উঠে আসবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, রুকু খুবই মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে বিভাগের সর্বোচ্চ রেজাল্টধারীদের একজন। ভবিষ্যতে সে বিভাগের শিক্ষকও হতে পারতো। তার এই অপমৃত্যুর পেছনের কারণ কী এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্ত করবে এবং বিচার সুনিশ্চিত করবে।