ছুটি না নিয়েই ২৭৩ দিনের মধ্যে ২৪৩ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত

বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার একেএম হারুনুর রশিদ

 

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

২৭৩ দিনের মধ্যে ২৪৩ দিন প্রায় বিগত ৮ মাস
অফিস করেন নি বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার এ.কে.এম হারুনুর রশিদ। অফিস থেকে কোন প্রকার ছুটি না নিয়েই তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত দিনের পর দিন। কর্তৃপক্ষ তাকে পাঁচবার কারণ দর্শানোর নোটিশ (শো‍‍`কজ) করলেও তিনি উত্তর দেননি তারও। অতঃপর তার বেতন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে প্রশাসনিক কারণে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের আদেশে বিগত ২২ সালের নভেম্বরের ২২ তারিখে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করে। যোগদানের পরদিন হইতে
জরুরি বিভাগের দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলে ও সে উক্ত সরকারি দায়িত্ব পালন করেনি। যোগদানের পর থেকে মাত্র ২৯ দিন কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তিনি সেদিন থেকেই এখন পর্যন্ত কর্মস্থলে অনুপস্থিত। পরবর্তীতে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শফিউর রহমান মজুমদার তাকে পাঁচবার শো‍‍`কজ করেন কিন্তু তারও উত্তর দেননি হারুনুর রশিদ । এমনকি কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া দেননি হারুনুর রশিদ ।

বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ৭ তারিখে হারুনুর রশিদ কে প্রথমবারের মতো কারণ দর্শানোর নোটিশ (শো‍‍`কজ) দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোনো উত্তর না পাওয়া গেলে এরপরে একই মাসের ২৯ তারিখ ও ২৩ জানুয়ারী ২৩ ইং তারিখ আবারো তাকে শো‍‍`কজ করেন কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ চলতি মাসের (মার্চের) ২৫ তারিখে তাকে সর্বশেষ কারণ দর্শানোর নোটিশ (শো‍‍`কজ) করা হয়। তারও কোনো উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি তিনি।

হাসপাতালের অফিস সহকারী কামনা শিষ জানান, এ.কে.এম হারুনুর রশিদ ২০২২ সালের ১৭ই নভেম্বর কর্মস্থলে যোগদান করেন এবং ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট থেকে পযর্ন্ত অনুপস্থিত। ২৭৭ দিনের মধ্যে তিনি মাত্র ২৯ দিন উপস্থিত ছিলেন। যদিও তিনি ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে অনুপস্থিত, তবে এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ইনচার্জ জুয়েল সরকার বলেন, জরুরী বিভাগে দীর্ঘ দিন যাবৎ সে অনুপস্থিত। যে কদিন এসেছিল তখন ও সে কোন দায়িত্ব পালন করত না, অফিসে এসে হাজিরা দিয়ে এদিক সেদিক ঘুরা ফেরা করত। যার কারণে জরুরি বিভাগে ব্যাঘাত সৃষ্টি হত।
আমরা তাকে দায়িত্ব অবহেলা না করার জন্য বারবার বলা হলেও সে উল্টো অকত্য ভাষা আচারণ করে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অনুপস্থিত থাকা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হারুনুর রশিদ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।

বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.দিদারুল হক বলেন, আমি শুধু এটুকু জানি যে সে দীর্ঘদিন হল অনুপস্থিত। কিছু দিন আসলে ও টিক মত দায়িত্ব পালন করত না, যার কারণে জরুরি বিভাগে ব্যাঘাত সৃষ্টি হত। এনিয়ে তাকে বেশ কয়েক বার বলা হলেও সে উল্টো তাদের সাথে অকত্য ভাষায় দুর্ব্যবহার করত।

 

এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শফিউর রহমান মজুমদার জানান, তিনি অফিসিয়ালি কোনও ছুটিও নেননি এবং আমাদের কিছু জানানও নি। হঠাৎ করেই দীর্ঘদিন হল অনুপস্থিত। তাকে ৫বার কারণ দর্শানোর নোটিশ (শো‍‍`কজ) দিলেও তিনি এর কোনও উত্তর দেননি।

তিনি আরও বলেন, তার সঙ্গে হাসপাতাল থেকে অসংখ্যবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন না। বর্তমানে সর্বশেষ তার বেতন বন্ধ করা হয়েছে। এখন সিভিল সার্জন বরাবর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে একটা পত্র দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে বেশ কয়েক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ক্যাপশনঃ বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ও উপ সহকারী হারুনুর রশিদ

 

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.