নৌকা ঠেকাতে পটিয়ায় লড়বেন হুইপ সামশু!

নৌকাকে বিজয়ী করতে মরিয়া তৃণমূল আওয়ামী লীগ

পটিয়া প্রতিনিধি:

এবার নৌকা ঠেকাতে মাঠে নামার ঘোষনা দিয়েছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। নানা বিতর্কের কারণে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি নৌকার বিপক্ষে লড়তে যাচ্ছেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বর্ষীয়ান নেতা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। নৌকার প্রার্থীর বিরোধীতা করে হুইপ নির্বাচন করার ঘোষণা দেওয়ায় তৃণমূল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। অনেক নেতাকর্মী বর্তমানে বেকায়দায় পড়েছেন। ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পটিয়ার রাজনীতির মাঠ। যে কোন সময় বর্তমান এমপি ও নৌকার প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর সোমবার বিকেলে নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এলাকায় পথ সভা ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরসহ সর্বস্তরের লোকজন অংশগ্রহণ করেন। একইদিন বিকেলে হুইপ সামশুল হক নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে অনুসারীদের নিয়ে মতবিনিময় করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পটিয়া থেকে নির্বাচন করার ঘোষনা দেন। বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একই আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করা নিয়ে অনেকটা সংঘাতের দিকে যেন দলীয় নেতাকর্মীদের ঠেলে দেওয়া হয়েছে। দলীয় ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। চট্টগ্রাম-১২ আসনে এবার নৌকা প্রতীক চেয়েছিলেন ১৫জন। এর মধ্যে হুইপসহ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী থাকলেও বিভিন্ন বির্তকের কারনে তিনবারের এমপি ও হুইপকে বাদ দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ নেতা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে অন্যরা কোন প্রতিক্রিয়া না দেখালেও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি ইতোমধ্যে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়েছেন। হুইপ ছাড়াও হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোহাম্মদ নাছির, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম,সাবেক এমপি চেমন আরা তৈয়ব,মেজর জেনারেল (অব:) এম এ ওয়াদুদ,জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক ও মহানগর পিপি আবদুর রশিদ, উপদেষ্টা ডক্টর জুলকারনাইন চৌধুরী জীবন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মো: ফারুক সহ ১৫ জন দলীয় মনোনয়ন চান। তাদের জীবন বৃত্তান্ত ও তৃণমূলের রিপোর্ট যাচাই বাছাই করে শেষনপর্যন্ত বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে মনোনীত করা হয়। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার প্রার্থী হিসেবে মোতাহেরুল ইসলামকে মনোনীত করলেও এর বিপক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি নির্বাচন করার ঘোষনা করায় তৃণমূলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। হুইপকে এলাকায় নামতে দিবেন না বলেও ইতোমধ্যে ঘোষনা দিয়েছেন নৌকার অনুসারীরা। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতীক নৌকা নিয়ে কাউকে চিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। নৌকার বিরোধীতা করলে দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে। দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে দলের সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। নৌকার মনোয়ন বঞ্চিত বর্তমান মন্ত্রী, এমপি ও তাদের পরিবারের কোন সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করার সুযোগ থাকবে না। পটিয়া আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী হাবিবুল হক চৌধুরীও খোদ এমপির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এমপির বিভিন্ন বিতর্কিত কাজের কারণে এবার পটিয়া আসনে সামশুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তৃনমূল কর্মীরা বলেন, আমরা যেহেতু দল করি, সেহেতু নৌকা ছাড়া আর কিছু বুঝি না। মনোয়ন বঞ্চিত কেউ নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নির্বাচনের ঘোষনা করলে তাকে মাঠে প্রতিহত করা হবে এবং তৃণমূলের দাবি থাকবে যেন বিদ্রোহী প্রার্থীকে বর্হিস্কার করা হয়।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.