সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ জোরপূর্বক একাধিক লোকের জায়গা দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা একত্রিত হয়ে কিছু জায়গা উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও অধিকাংশ জায়গা এখনো পর্যন্ত নিজের দখলে রেখেছেন তিনি। দখলকৃত জায়গাগুলোর উদ্ধার ফিরে পেতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
রবিবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ১১ টার দিকে উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফাজর পাড়া এলাকায় সকল ভুক্তভোগী একত্রিত হয়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
জায়গা দখলে রাখা অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আহমদ কবির। তিনি উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফাজর পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত সোলতান আহমদের ছেলে। এ ছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
একাধিক ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় মোকতার হোসেন গংদের পৈতৃক জায়গাটি দলীয় প্রভাব ও তার নিকটতম আত্মীয় পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ দখল করে রেখেছেন আহমদ কবির। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের কোনো সদস্য প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন তিনি। অভিযুক্ত আহমদ কবিরের কিছু জায়গা থাকলেও তিনি পুরো জায়গা দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও তাকে বিভিন্ন সময় সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে জায়গার সমস্যাটি নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
ভুক্তভোগী মোকতার হোসেন বাবুল বলেন, অভিযুক্ত আহমদ কবির দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আমার জায়গাটি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। আমার জায়গাটি ফিরে পেতে আমি স্থানীয় গ্রাম আদালতে বিচার দিলে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে এলাকা ছাড়া করেন। তার অত্যাচারের ভয়ে আমি দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করে দীর্ঘদিন পর নিজ এলাকায় ফিরে এসেছি। সঠিক পরিমাপের মাধ্যমে আমার জায়গাটি বুঝে পাওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
জুনু আকতার নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, দীর্ঘদিন আগে স্বামীকে হারিয়েছি। তার রেখে যাওয়া জায়গাটি আহমদ কবির দখল করে রেখেছেন। তার বাবা জায়গা-জমির মুন্সি ছিলেন। সেই সুবাদে তিনি অনেকের জায়গা জালিয়াতি করে হাতিয়ে নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের জায়গাটিও হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। পরিমাণের মাধ্যমে আমার জায়গাটি ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
অপর এক ভুক্তভোগী বলেন, এখানে আমার ৮ শতক জায়গা রয়েছে। বর্তমানে আমি প্রায় ৩ শতক জায়গার উপর একটি বসতঘর নির্মাণ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। একাধিকবার বলার পরেও আমার বাকি ৫ শতক জায়গা তিনি বুঝিয়ে না দিয়ে জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। দলিলপত্র নিয়ে সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হলেও তিনি কাগজপত্র প্রদর্শন করা থেকে বিরত থাকেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আহমদ কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জোরপূর্বক জায়গা দখলে রাখার অভিযোগটি অস্বীকার করে তিনি জানান, ক্রয়সূত্রে আমি ওই জায়গার মালিক। আমি কারো জায়গা জোরপূর্বক দখল করিনি। কাউকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিও করিনি। আমি স্বাভাবিকভাবে আমার ক্রয়কৃত জায়গা দখলে রেখেছি।