জোবাইর বিন জিহাদী
একের পর এক রহস্যময় খুনের ঘটনা ঘটছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়।যেন খুনের রোল মডেলে পরিণত হচ্ছে এই অঞ্চলটি।চলতি ১ মাসেই প্রায় ৫ খুন সহ ঘটছে একের পর এক জঘন্য অপরাধ।অপরাধ দমনে আসামীদের গ্রেপ্তার সহ সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও অতিরিক্ত অপরাধের কারণে অনেকটা ক্লান্ত সাতকানিয়া থানা পুলিশও।
গত ১ মে সাতকানিয়া উপজেলাস্থ কাঞ্চনা ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জসীমকে।এরপর থেকেও শুরু একের পর এক জঘন্য হত্যাকান্ড।চলতি মাসের ১ জুন সাতকানিয়া কেওচিয়া ইউনিয়নে পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপন ছোট ভাই সোহেল বড় ভাই আহমদ কবিরের উপর নৃশংস ভাবে হামলা করে।
৫ জুন খাগরিয়া ইউনিয়নে তৌহিদুল ইসলাম (৪০) নামক এক ব্যক্তিকে শনিবার দা, কিরিচ সহ ধারাঁলো অস্ত্র নিয়ে একাধিক ব্যক্তি মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে এবং উক্ত ঘটনায় আসামীদের গ্রেপ্তারও করা হয়।একই মাসে কেওচিয়া ইউনিয়নে যৌতুকের জন্য বউয়ের উপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এমরান(৩৩) নামক এক যুবক।
১৯ জুন শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার সময় ছদাহায় বন্ধুর বাড়ি থেকে ফেরার পথে পূর্ব শত্রুতার জেরে আরেক বন্ধুকে ছুরিকাঘাত করে স্থানীয় বখাটেরা।ছুরিকাহত যুবকের বাড়ি কেওচিয়ার ৯ নং ওয়ার্ড নয়াপাড়ায়।
এরই মধ্যে গত ২১ জুন খাগরিয়ার মৈশামুড়ায় ইলিয়াস চৌধুরী স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে পারিবারিক মনোমানিল্যের জেরে হামলা করেন তার পুত্রবধূ নাছমিন।ঘটনার দিনেই আসামীকে পুলিশে হেফাজতে নেয় সাতকানিয়া থানা পুলিশ।পরে ২৫ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন পুত্রবধূর হাতে হামলার শিকার হওয়া শাশুড়ি রোকেয়া বেগম।
সর্বশেষ ২৫ জুন বৃহস্পতিবার রাত দেড় টার সময় দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে পেটের মধ্যে ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ফার্ণিচার দোকানের কর্মচারী রকি (৩৫) কে।উক্ত ঘটনার আসল রহস্যও উন্মোচন করেছেন বলে জানান সাতকানিয়া থানা সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু।
রহস্যময় খুনের ঘটনা ছাড়াও এই অঞ্চলে ঘটছে নারী নির্যাতন,ইয়াবা পাচার,জমি দখল সহ একের পর এক জঘন্য অপরাধ।অপরাধের মাত্রায় যেন অনেকটা ক্লান্ত সাতকানিয়া থানা পুলিশ।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানা সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু বলেন, প্রতিটি খুনের ঘটনা মূলত পরিবার কেন্দ্রিক সৃষ্ট ঘটনা।আমরা প্রত্যেকটা ঘটনার তদন্ত করে আসামীদের গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছি।
খুন হামলা সহ এসব জঘন্য অপরাধের কি কারণ বলে মনে করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূলত পারিবারিক,সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয় থেকে এসব ঘটনার সৃষ্টি বলে মনে করছি।