শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তা ও স্বপ্নের ফসল আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ও সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীর সাথে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এর সম্মানিত সদস্য ও বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক, এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের একসময়ের গুণী শিক্ষক প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেনের সাথে মতবিনিময় সভা ১১ জানুয়ারী ২০২২ ইং রবিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
আইআইইউসি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি’র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় গেস্ট অব অনার ছিলেন আইআইইউসি’র ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ। বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মাছরুরুল মাওলা, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, বিওটি’র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শাহাদাত হোসাইন। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিওটি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ড. কাজী দ্বীন মুহাম্মদ, আইআইইউসি’র রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ শফীউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আকতার সাঈদ,
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুর শুধু বাঙালী জাতির নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন বিশ্বনেতা। সমকালীন বিশ্বনেতারা বঙ্গবন্ধুর ক্যারেশম্যাটিক নেতৃত্ব দেখে বিমোহিত বিমুগ্ধ হয়েছিলেন। কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন, আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর মতো একজন কিংবদন্তি নেতা পেয়েও আমরা যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারিনি। যে মানুষ বাঙালী জাতির অধিকার আদায় করতে গিয়ে নিজের জীবনের ১৪টি বৎসর জেলে কাটিয়েছেন, তাকে বাঁচতে দেইনি। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুণর্গঠনের পাশাপাশি সুপরিকল্পিত অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই উন্নয়নের ধারাকে থামিয়ে দেয় দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের অর্থনীতি নিমজ্জিত হয় এক গভীর অন্ধকারে। থেমে যায় সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণ। ড. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, পৃথিবীর কোন দেশ জাতির পিতাকে নিয়ে কটুক্তি করেনা। বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে এখনো অনেকে গ্রহন করতে পারেনি। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন বঙ্গবন্ধুর নাম শুনিনি, শুনতে দেয়া হয়নি। সিলেবাসে বঙ্গবন্ধুর নাম, অবদান সন্নিবেশিত করা হয়নি। বরং পরিকল্পিতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তা ও স্বপ্নের ফসল আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার জাদুর পরশে অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে যারা কটুক্তি করেছিল তারাও আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফলভোগি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণকে অন্তর্ভূক্ত করায় যিনি মূখ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি হচ্ছেন খ্যাতিমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের আর্কিটেক্ট। বিগত প্রায় তের বছর ধরে তিনি সামনে থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও অঙ্গীকার পূরণ করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অনেক আগেই ডিজিটাল প্রযুক্তির কথা চিন্তা করেছিলেন। ঐ সময় ব্যয়ের কথা চিন্তা করে অনেকেই পাশের দেশ থেকে সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্বনির্ভর আকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালের ১৪ জুন রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় ভূ উপগ্রহ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এরকম দূরদর্শী চিন্তাভাবনা ভাবতেই অবাক লাগে। ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের (ফোর আইআর) চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের ভবিষ্যৎ উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা কী হবে সে সম্পর্কে এখনই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আর চুতুর্থ শিল্ল বিপ্লবের জন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহকে মেধাবী ছাত্র প্রোডাশন দিতে হবে, আর সেই বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে আইআইইউসি। তিনি আইআইইসি’র শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তি সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে বলেন, দক্ষ টেকনিশিয়ান দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ল্যাব পরিচালনা করতে হবে। তিনি বলেন, ইউরোপ- আমেরিকায় বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি, অথচ আমাদের দেশে যুবকের সংখ্যাই নেই। এটা একটা সম্ভাবনা। দেশের যুবকদের সম্পদে পরিণত করতে হবে। এদের মেধা আছে। ওদের মেধা কাজে লাগাতে পারলে আগামীতে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে আইআইইউসি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি বলেন,
ইউরোপ- আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া শেষ করতে না করতেই চাকরি হয়ে যায়। ওইসব দেশের মতো আইআইইউসি’র ছাত্রদেরকে গুণগত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে লেখাপড়া শেষ হতে না হতেই কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আইআইইউসি থেকে তৈরি হবে ইসলামিক স্কলার, বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা ও গ্রুপ অব কোম্পানিজের কর্ণধার। তিনি বলেন, শিক্ষা ও শিক্ষকতায় দায়বদ্ধ এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রদান করা হলেই দেশের উচ্চশিক্ষা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে। যোগ্য ব্যক্তিকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেয়া হলে উচ্চশিক্ষায় গুণগত পরিবর্তন আসবে না। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক স্কলারশিপ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, লেখাপড়া করে সার্টিফিকেট নিতে হবে। নিজের সার্টিফেকেটের মূল্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। জ্ঞান- প্রযুক্তিতে মুসলমানদের স্বর্ণালী অতীতের কথা উল্লেখ করে বিওটি চেয়ারম্যান ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম মুসলমানরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।
১৩৫০ সালে মরক্কোর ফেজে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্পেনের কর্ডোবা বিশ্ববিদ্যালয় মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অক্সফোর্ড ও হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ও লাইব্রেরিকে সমৃদ্ধ করতে হবে। পান্ডুলিপি বাড়াতে হবে। তিনি দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠতে হলে প্রচুর লেখাপড়া করতে হবে। নিজের একাডেমি ক্যারিয়ারের কথা উল্লেখ তিনি বলেন, ছাত্রজীবনে জীবনে কখনো দ্বিতীয় হয়নি। সমাজসেবা ও রাজনীতি এখনো লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লকডাউনের সময় ২৫০০ পৃষ্ঠার বই লিখেছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে নিয়মিত আইআইইউসি’র সামগ্রিক কার্যক্রমের আপডেট জানানো হচ্ছে। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে খুব হ্যাপি। ড. সাজ্জাদ হোসেনকে আইআইইউসি’র ফ্যামিলি মেম্বার আখ্যায়িত করে বলেন, ইউজিসি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্নভাবে ভূমিকা রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

চট্টগ্রাম সংবাদ/ আই এইচ।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.