নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার নেতৃত্বে একদল যুবক মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেল তিনটার দিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল করেছে। ঘটনাস্থল থেকে কোতোয়ালী থানার দূরত্ব মাত্র ২০০ গজ, তবে থানার ওসি আবদুল করিম বলছেন, ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, এনসিপির শতাধিক কর্মী নিউমার্কেটের দোস্ত বিল্ডিংয়ে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের তালা ভেঙে প্রবেশ করে। এ সময় তারা অফিসের আসবাবপত্র ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে। পরে পুরো কার্যালয়টি দখল করা হয়। রাত আটটা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন।
এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেন এনসিপির চট্টগ্রাম নগর কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নগরের সাবেক আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন। তার সঙ্গে আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও অন্তত ৪০ জন কর্মীও ছিল। তাদের হাতে হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা ছিল। এ সময় তাদের সঙ্গে দোস্ত বিল্ডিং লিজগ্রহীতা হিসেবে দাবি করা জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তিও ছিলেন সেখানে।
জানা গেছে, ৩৪ বছর আগে, ১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে দোস্ত বিল্ডিং লিজ দেয়। তবে আইনি নানা জটিলতা ও একাধিক মামলা চলমান থাকার কারণে জাকির ভবনটির দখল নিতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মূলত জাকিরের পক্ষ নিয়েই এনসিপি নেতারা ভবনটি দখল করতে যান।
এদিকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, একদল তরুণ কার্যালয়ের সামনের দেয়ালে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করছেন। ভিডিওতে আরিফ মঈনুদ্দিনসহ এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিও ধরা পড়েছে।
এনসিপির চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘ভবনটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত। একাত্তরের পর বিহারিরা এটি ফেলে গিয়েছিল। রাতে এখানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চলত। আমরা খবর পাওয়ার পর মঙ্গলবার সেখানে যাই। তালা ভেঙে কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করি। সেখানে বিভিন্ন প্রমাণ দেখতে পাই। এ কারণে ভবনটি তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। আগামী দুই দিন আমরা ভবনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করব।’
চট্টগ্রাম নগরের ঐতিহ্যবাহী দোস্ত বিল্ডিং-এর চতুর্থ তলা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ওই বিল্ডিংয়ে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নয়, বিএনপি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কার্যালয় রয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এই কার্যালয়ে এক দফা ভাঙচুর হয়েছিল। এরপর থেকে ভবনটি তালাবদ্ধ ছিল।