বিএনপি’তে অসন্তোষ খোদ বিএনপিরই, সমর্থনহীনতায় প্রার্থীতা প্রত্যাহার

 

মোঃ তারেকুল ইসলাম:

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের ধারাবাহীকতায় ৪র্থ ধাপে অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে একাধিক প্রার্থী থাকলেও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন কেবল বিএনপি এবং আওয়ামীলীগের ২জন একক প্রার্থী। তবে এবার নির্বাচনের অন্তত ২০ দিন পূর্বে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলেন বিএনপি মনোনীত একক মেয়র প্রার্থী এ.জেড.এম মঈনুল হক চৌধুরী খোখন। ২৬ই জানুয়ারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই বিষয়টির ছড়াছড়ি দেখা গেলে তার সাথে যোগাযোগ করা হয়। এসময় প্রার্থীতা প্রত্যাহারের কারন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির নীতি নির্ধারকরা মনে করেছেন আমি দলীয়ভাবে মনোনয়নের যোগ্য। তাই বিএনপির নীতি নির্ধারকরা আমাকে দলীয়ভাবে সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। কিন্তু আমাকে মনোনীত করার পর থেকেই আমার দলীয় কিছু নেতা কর্মীরা প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান এবং সরাসরি মানবন্ধন করেছে। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দালাল সহ বিভিন্ন অকথ্য শব্দ তারা আমার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ব্যবহার করেছে। এমনকি তারা আমাকে বিভিন্ন প্রকার হুমকিও প্রদান করেছে। আমি আমার ভাইকে রাজনীতির অভ্যান্তরীন কোন্দলে পঙ্গু হতে দেখেছি। এক কথায় আমি খুবই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে এবং ভবিষ্যতে আমার জীবন হুমকির মুখে দেখে আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছি। অপরদিকে বিরোধি দলের হুমকিতো আছেই। সবচেয়ে বড় কথা হল আমি নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছি কেবল মাত্র দলকে বাচাতে এবং দলীয় নেতাকর্মীদেরকে জাগ্রত রাখতে। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীরাই যখন সরাসরি আমার বিরুদ্ধে অবস্থান করছে তাহলে আমাকে বাকীরা কি আর ভোট দিবে! তাই আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছি। এলডিপি থেকে বিএনপিতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ইতিপূর্বে কখনো এলডিপি ছিলাম না। কর্ণেল অলি আহমেদ সাহেব মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তার জন্য চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে একটি সংবর্ধনা অনুষ্টান করা হয়। সেই অনুষ্টানে আমি তাকে ফুল দিয়েছিলাম। সে বিষয়টাকে কেন্দ্র করে আমার পেছনে এলডিপির এই ট্যাগটা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ সাতকানিয়াতে অনেক বিএনপি নেতা আছে যারা প্রত্যক্ষভাবে এলডিপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল এবং কর্ণেল অলি আহমদের বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে নিয়মিত উপস্থিত হত। কিন্তু আমি এর ধারে কাছেও ছিলামনা। আমি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। সেই সুবাধেই দলীয়ভাবে আমাকে মেয়র প্রার্থী মনোনীত করা হয়। কিন্তু আমার দলীয় নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে আমার বিরুধীতা করে এবং হুমকি ধমকি দেয়। যার কারনে আমার এবং আমার পরিবারের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছি।
সবশেষ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে প্রকাশিত ছবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন আইনজীবী। ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া দুজনেই আইনজীবী এবং বয়সে আমার জুনিয়র সহকর্মী। আমি তাদের সাথে দেখা করেছি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর। এমন সময় যে কেউ ছবি উঠাতে পারে। তা নিয়েও বিভিন্ন আলোচনা হচ্ছে। তবে যেখানে আমার দলীয় কর্মীরা প্রত্যক্ষভাবে আমাকে হুমকি এবং প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান করছে সুতরাং আপনাদের বুঝতে আশা করি সমস্যা হবেনা বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও আমি কতটা হুমকি ধমকির শিকার হয়েছি।

উল্লেখ্য, সারাদেশে পৌরসভা নির্বানের ধারাবাহীকতায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আগামী ১৪ই ফেব্রায়ারী অনুষ্টিত হবে সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচন। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি মনোনীত একক দুই মেয়র প্রার্থী ও ৪৮ জন পুরুষ কাউন্সিলর ও ৮জন মহিলা কাউন্সিলর সহ মোট ৫৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছিলেন। তবে নির্বাচনের আরো ২০ দিন বাকী থাকতেই বিএনপি মনোনীত একক প্রার্থী এ জেড এম মঈনুল হক চৌধুরী খোখন নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে নানা গুঞ্জন

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.