জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম, ছাদ ভেঙ্গে পড়ার আতঙ্কে কর্মকর্তা কর্মচারীরা

মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের,বাঁশখালী 
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে চলছে উপজেলা ডাকঘরের কার্যক্রম। ভবনের বাইরে দেয়ালে দিনে দিনে বেড়ে উঠছে পরগাছা। ড্যাম ধরে খসে পড়ছে দেওয়ালের পলেস্তারা। যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। দূর থেকে দেখে মন হয় এটি পরিত্যক্ত ভবন। অথচ এটি সরকারি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
জানা যায়, ভবনটি প্রায় ২ যুগ ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ভেতরেই চলছে পোস্ট অফিসের সব কাজ। প্রতিদিন শত শত মানুষের যাতায়ত এ অফিসে। ভবনটি যেকোনও সময় ভেঙ্গে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে বাঁশখালী  উপজেলা। বাঁশখালী থানার পরিষদ উত্তর পাশে পুরনো ভবনে অবস্থিত উপজেলার প্রধান ডাকঘর। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়েও এই সরকারি দপ্তরের মাধ্যমে ডাক আদান-প্রদান, আর্থিক লেনদেন, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার খাতা বোর্ডে প্রেরণ, পার্সেল আদান-প্রদান ও বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র, ডাক, জীবনবীমাসহ অতি অল্প সময়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকাও পাঠানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা দেওয়া হয়। এ অফিসে একজন পোস্টমাস্টারসহ ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।
দুই যুগেরও বেশি সময় আগে নির্মিত ভবনটি সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে দিন দিন। স্থানীয়রা মনে করেন, অতিদ্রুত ভবনটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
জলদী মাহাজন পাড়া এলাকার বসিন্দা মিন্টু দাশ ও রাশেদা বেগম জানান, বাঁশখালী প্রধান এই ডাকঘর (পোস্ট অফিস) টি ১৯৫৮ সালে স্থাপিত হয়। পুরনো এই ভবনটির ছাদের সিমেন্ট বালি খসে লোহার রড বেরিয়ে গেছে। দেওয়ালে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। আর এর মধ্যেই চলছে অফিসের কার্যক্রম। বিগত ৩-৪ বছর যাবৎ শুনতেছি টেন্ডারে হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই ত হচ্ছে না।
পোস্ট অফিসের পোস্টাল অপারেটর মোঃ আবুল কালাম বলেন, উপজেলা সদরের এ পোস্ট অফিসে প্রতিদিন অনেক টাকা লেনদেন হয়। অথচ এ ভবনে প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাখার মতো নিরাপদ স্থান নেই।
তিনি আরও বলেন, অফিসে বসে কাজ করার কোনও পরিবেশ নেই। অথচ পোস্ট অফিসের ই-সেন্টার সেবাসহ অন্যান্য সেবা নিতে প্রতিদিনই শত শত মানুষ যাতায়াত করছেন। অর্থ লেনদেনও এখন এ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাই পোস্ট অফিসের ভবনটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার।
এ বিষয়ে উপজেলা পোস্টমাস্টার চন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, অফিসে প্রবেশ করতেই ভয় লাগে। সবসময় ছাদ ভেঙ্গে পড়ার আতঙ্কে থাকতে হয়। গ্রাহকরা ভয়ে ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতে চান না।
তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে পোস্ট অফিসের অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। মূল্যবান কাগজপত্র গুছিয়ে রাখা খুব কঠিন হচ্ছে। এই ভবনটি সংস্কার হওয়া খুবই জরুরী।
মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.