`দুর্দিনে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়ে চির আপন হয়েছে ভারত’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ভারত আমাদের চুক্তি করা বন্ধু নয়, দুর্দিনে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়ে চির আপন হয়েছে দেশটি।

শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

মেয়র এম রেজাউল করিম বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে ভিতু বাঙালি বলত। সেই ভিতু বাঙালি বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে চরম প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৯৭১ আমাদের অস্ত্র ছিল না, কিন্তু ছিল অটুট মনোবল। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নেতৃত্বকে শাণিত করেছেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী। তিনি যদি এক কোটির বেশি বাঙালিকে আশ্রয় না দিতেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ না দিতেন, প্রবাসী সরকার গঠনের সুযোগ করে না দিতেন, তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আরও অনেক বেশি রক্ত দিতে হতো।

তিনি আরও বলেন, শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা নয় স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ইন্দিরা। তা না হলে আমরা হয়তো আমাদের এই মহান নেতাকে ফিরে পেতাম না। প্রকৃত বন্ধুত্বের প্রমাণ হয় সুখে দুঃখে। ভারত আমাদের চুক্তি করা বন্ধু নয়, দুর্দিনে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়ে চির আপন হয়েছে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তারা শুরু করে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। কোটি মানুষ প্রাণের ভয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নেয়। তখন ইন্দিরা সরকার তাদের খাদ্য ও জীবনের নিরাপত্তা দেয়। তিনি অস্থায়ী সরকার গঠন ও পরিচালনায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে সব সমস্যা মোকাবিলা করে তিনি স্বীকৃতি দেন বাংলাদেশকে।

সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ আলী আব্বাস বলেন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ক্লাবের নিত্য কাজের বাইরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে উজ্জীবিত করতে প্রচার করে। তিনি আগামীতে চট্টগ্রামে প্রেসক্লাবে ইন্দিরা গান্ধী কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দেন।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, বিএফইউজের সহ-সভাপতি শহীদুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.