চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীতে কথিত ছাত্রলীগ কর্মীকে খুনের মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় ১৬ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডিতরা হলেন- জহির, খোরশেদ, রকি, আইয়ূব, ইমন এবং ফিরোজ। আদালত তাদের যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাবাসের সাজা দিয়েছেন।
খালাস পাওয়াদের মধ্যে আছে- আকবর, তারেক, ফয়েজউল্লাহ, আলাউদ্দিন, পিন্টু, রবিন, হায়দার, নুরুল বশর, জিদান, হাসান, কাকন, জিয়াউদ্দিন, সাজ্জাদ ও মো. ইলিয়াছ এবং কিশোর বয়সী আরও দু’জন।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি আইয়ূব খান বলেন, ‘নিহত যুবক ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। দণ্ডিতরাও তার সঙ্গে একই রাজনীতি করত। তারা পরস্পরের বন্ধু ছিল। নিহত যুবক বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে একাধিক মামলার আসামি ছিল। বন্ধুরাও সবাই উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির ছিল। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে ওই যুবককে বন্ধুরা মিলে খুন করে। পুলিশের তদন্তে পাওয়া এসব তথ্য আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারায় এজাহারভুক্ত ছয়জনকে সাজা দিয়েছেন। বাকিদের নাম বিভিন্ন আসামির ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আদালতের কাছে বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে।’
২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর গভীর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় রেলগেইটের পাশে একটি বাদাম গাছের নিচে নুরুল আলম রাজু (২০) নামে এক তরুণকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রেখে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নুরুল আলম রাজু পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকার হাজী মোল্লা কোম্পানি বাড়ির মো.ইউসুফের ছেলে। এ ঘটনায় রাজুর ভাই কুতুবুল আলম বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নুরুল আলম রাজু এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা খোরশেদ আলমের গ্রুপের কর্মী হিসেবে তার পরিচিতি ছিল। তবে হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ জানিয়েছিল, রাজু লেখাপড়াই জানত না। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিল। গণমাধ্যমে তথ্য এসেছিল, মাদকের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে খোরশেদ আলম গ্রুপের সঙ্গে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাবেদুল আলম মাসুদ গ্রুপের বিরোধের জের ধরে রাজুকে খুন করা হয়।
তবে পিপি আইয়ূব খান জানিয়েছেন, পুলিশের তদন্তে মাদকের টাকার ভাগ-বাটোয়ারার বিষয়টি উঠে আসেনি। আদালতেও সেটা প্রমাণ হয়নি। মূলত সংগঠন কেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের জেরেই রাজুকে হত্যা করা হয়।
চট্টগ্রাম সংবাদ/ আই এইচ।