বিশেষ প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ০৯ নং ওর্য়াড় হাবিলাশ চৌধুরী এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষে আহতদের তাৎক্ষণিক বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও একাধিক ব্যক্তির অবস্থা এখনও আশংঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
গত ১৫ জানুয়ারি বিকেলে শেখ আহমদ (৩৭) পিতা মৃত ইব্রাহিম ,মনজুর আলম (৩২) পিতা এয়াকুব মিয়া,সৈয়দ আহমদ(৩৫) পিতা আবদুল শুকুর, আবদুল কাদের (৩২)পিতা মৃত আবদুল মফিজ,নাছির(৩০) পিতা মৃত মো:ইউছুপ সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে প্রথমে বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন লোহাগাড়া সদরের দক্ষিণ সুখছড়ি হাবিলাশ চৌধুরী এলাকার বজল আহমদের ছেলে মো: আবু ছালে। যাহা মামলা নং ৩৪।
মামলা সূত্রে জানা যায়,উপজেলার লোহাগাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুখছড়ি হাবিলাশ চৌধুরী পাড়া এলাকার আবু ছালে গং ও শেখ আহমদ গংয়ের মধ্যে জায়গা -জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে।তবে এই জায়গা নিয়ে বহুবার স্হানীয় পর্যায়ের সালিশ বৈঠকে বসেও শেখ আহমদ গংয়ের উচ্ছৃঙ্খলতায় কোন সমাধান করা যায়নি বলে স্বীকার করেন মামলার বাদী আবু ছালে।এই জায়গা নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান ও নিষেধাজ্ঞা আছে বলে জানা যায় এজাহার সূত্রে।
ঘটনার ব্যাপারে আরো জানতে চাইলে বাদী আবু ছালে বলেন,পিতার পৈত্রিক মৌরসী দীর্ঘ বহু বছরের ভোগ দখলীয় খতিয়ানভুক্ত নাল সম্পত্তি। উক্ত জায়গা বিবাদীগং দখলে নিয়ে যেতে চায় অন্যায় ও অহেতুক ভাবে দাবী করিয়া। গত ১২.০১.২০২২ তারিখে অজ্ঞাত ১২/১৫ জনের সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল ভাড়া করে নিয়ে এসে জোর পূর্বক দখল করার চেষ্টাসহ পাকা বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করিতে আসে বিবাদী শেখ আহমদ গং।এসময় আমার চাচাত বোন ও চাচী ঘটনাস্থলে গিয়ে বিবাদীদেরকে অনুরোধ করে আদালতের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত আমার পিতার ভোগ দখলীয় জায়গায় কোন ধরনের ওয়াল না দেওয়ার জন্য বলে।এক পর্যায়ে বিবাদী শেখ আহমদ গং কে বাঁধা প্রধান করে তাঁরা।কিন্তু এতে বিবাদীরা আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বেধম মারধর করে এবং ব্যবহৃত মোবাইল, স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়। বর্তমানে গুরুতর আহত হয়ে অনেকে আশংঙ্কাজনক ভাবে হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান তিনি।এমনকি জায়গা দখলের পায়তারায় তারা কেন্দ্রীয় নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে আমাদের উপর হামলা মামলা ও হুমকি অব্যাহত রেখেছে স্হানীয় পদবীধারী কিছু নেতাসহ ।তাছাড়া তারঁ দাবী বিবাদীগং পরধনলোভী, সন্ত্রাসী,ভূমিদস্যু,ঝগড়াটে প্রকৃতির লোক।
অপরপক্ষে সদর ইউনিয়নের ৮নং ওর্য়াড়ের পূর্ব লোহাগাড়া হাজির পাড়া এলাকার নুরুচ্ছাফার ছেলে মোহাম্মদ সাইফুল বাদী হয়ে বজলুর রহমানের ছেলে আবু ছালেকে প্রধান অাসামী করে ৫জনের নাম উল্লেখ করে লোহাগাড়া থানায় পাল্টা মামলা করে গত ১৫ জানুয়ারি ।যাহার মামলা নং ৩৫।যেখানে মামলার অভিযোগে জানা যায় যে আবু ছালের আনিত অভিযোগ সাইফুল গংয়ের বিরুদ্ধে সম্পুর্ন ভিন্ন। থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় আবু ছালে গংয়ের সাথে তাঁদের জায়গা জমির বিরোধের কথা উল্লেখ নাই বললে চলে।বরং সাইফুল ইসলাম দাবী করেন তিনি গত ১২.০১.২০২২ ইং তারিখে নানার বাড়িতে বেড়ানোর জন্য যায়। এসময় বিকেল ৫টা নাগাদ হঠ্যৎ নানার বাড়ির বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করার এক পর্যায়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে এবং তারঁ মেঝ খালা রেহেনা আক্তার (৩৮) কে জায়গা জমির কথা বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আবু ছালে গং। এমনকি ছোট খালা আরজু বেগম(৩১)এবং তারঁ মা আছিয়া বেগম (৫০)সহ অনেকজনকে হত্যার উদ্দেশ্য লাতি,কিল,ঘুষি মারে বলে সাইফুল ইসলাম দাবী করেন। এছাড়া তারা দেশের আইন কানুন কিছুই মানে না ও দেশের প্রচলিত ধরাকে স্বরাজ্ঞান করিয়ে চলে বলে তারঁ একান্ত দাবী।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়,সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় পৃথক পৃথক মামলা রুজু হয়েছে।অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অব্যাহত চেষ্ঠাসহ তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।