দিনভর নানা নাটকীয়তা শেষে মধ্যরাতে অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালেন ইমরান খান।
শনিবার (৯ এপ্রিল) মধ্যরাতে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) জ্যেষ্ঠ সাংসদ ও প্যানেল স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনাস্থা ভোটে হেরে গেছেন তিনি। আর এর মধ্যদিয়ে পাকিস্তানের সাত দশকের কোনো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারার ইতিহাসে ঠাঁই নিলেন সাবেক এ ক্রিকেট তারকা।
অ্যাসেম্বলিতে ৩৪২টি ভোটের মধ্যে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থার ভোট পড়েছে ১৭৪ টি। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট বিপক্ষে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়তে হলো ইমরান খানকে।
পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিদায়ের খবরে পার্লামেন্টে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বিরোধীরা। এরইমধ্যে হেলিকপ্টারে করে ইসলামাবাদ ছেড়েছেন ইমরান।ভোট শেষে ফল ঘোষণা করেন নতুন স্পিকারের দায়িত্ব নেওয়া সরদার আয়াজ সাদিক। এর আগে সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগ করেন।
অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরাজয়ের পর বিরোধীদলীয় নেতা পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ বলেছেন, নতুন সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে না। আমরা প্রতিশোধ নেব না।
বক্তব্যের শুরুতেই জাতীয় পরিষদে সব নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি অতীতের তিক্ততায় ফিরে যেতে চাই না। আমরা তাদের ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা অবিচার করব না। অকারণে মানুষকে কারাগারে পাঠাব না। আইন ও বিচার প্রক্রিয়া তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কেউ সে ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না।
এছাড়া পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, আমি গোটা জাতিকে ও পরিষদের সদস্যদের অভিনন্দন জানাই। অনাস্থা ভোট সফল করায় আমরা একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। এরমধ্য দিয়ে একজন ‘অগণতান্ত্রিক বোঝার’ (ইমরান) শাসনের ইতি ঘটেছে। আজ ১০ এপ্রিল আমরা পুরানা পাকিস্তানকে ফিরে পেয়েছি।
বিরোধী সদস্যদের ধৈর্যের প্রশংসা করে সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ জারদারি, জেইউআই-এফ প্রধান মাওলানা ফজলুর রেহমানসহ অন্য দলের নেতাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
২০১৮ সালের ২৫ জুলাই ১৪৯টি আসনে জাতীয় পরিষদের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে পিটিআই। এরপর ইমরান খান আর ইপিএমএল-কিউ, এমকিউএম-পি, বিএপির সঙ্গে টক্কর দিয়ে সরকার গঠন করেন।
ওই বছরের ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন ইমরান খান। চলতি বছর ৯ এপ্রিল মধ্যরাতে অনাস্থা ভোটে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হলো।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিন বছর সাত মাস ২৩ দিন (৪৩ মাস ২৩ দিন) দায়িত্ব পালন করেন ইমরান খান।