মহেশখালীতে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে টুং টাং শব্দে ব্যস্ত কামারপল্লী

মহেশখালী প্রতিনিধি

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় কামার পল্লীগুলোতে কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে। কুরবানির সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা। গরমের তোয়াক্কা না করে আগুনের কাছাকাছি কাজ করছেন তারা। দোকানের জ্বলন্ত আগুনের তাপে শরীর থেকে ঝরছে অবিরাম ঘাম। চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ, তবু থেমে নেই এ কাজ। বটি, ছুরি, দা ও চাকু সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানগুলোর সামনে। ভেতরে চলছে কাজ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার খণ্ড, কেউ দিচ্ছেন শাণ, কেউ কেউ কয়লার আগুনে বাতাস দিয়ে আগুন জ্বালাচ্ছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে এই ব্যস্ততা। সোমবার (৪ জুলাই) সরেজমিনে মহেশখালী উপজেলার পৌরশহর গোরকঘাটা বাজার ও উপজেলার কালারমারছড়া বাজারের কামারপাড়ায় গিয়ে এমন চিত্রই দেখা যায়। বেশ কয়েকজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাড় কোপানোর চাপাতি প্রতিটি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দা আকৃতি ও লোহাভেদে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, ছুরি ৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং ধার করার স্টিল প্রতিটি ৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এ দিকে পুরনো যন্ত্রপাতি শাণ দিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। শেখ আবদুল্লাহ নামে এক ক্রেতা বলেন, বছরের অন্যান্য সময় এই দা-ছুরিগুলো বাড়িতে ফেলে রাখা হয়। এতে লোহার তৈরি এসব জিনিসে মরিচা পড়ে যায়। কুরবানির সময়ই মূলত দা-ছুরিগুলো কাজে লাগে। গোরকঘাটা বাজারের কামারপাড়ার রণধীর কর্মকার বলেন, বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চলছে। বছরের অন্য সময়ে কাজ কম থাকে। তবে কুরবানির ঈদ এলে কাজের চাপ বেড়ে যায়। দিনরাত কাজ করেও রেহাই পাওয়া যায় না। নতুন দা-ছুরি কেনার সঙ্গে সঙ্গে লোকেরা পুরনো যন্ত্রপাতিও শাণ দিতে নিয়ে আসছেন। কালারমারছড়া বাজার এলাকার এস.এম সারওয়ার কামাল বলেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। আধুনিকতার রেশে যেন এই কামাররা হারিয়ে না যান সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.