পটিয়ায় সরকারি প্রকল্পের টাকা মেরে দিল পিআইও, তদন্তের মাঠে দুদক

চট্টগ্রামের পটিয়ার সাবেক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সুপ্তশ্রী সাহার বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের বিলে স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে উপজেলার একটি প্রকল্পের বিলের স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাৎ করা ও তার আওতাধীন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে অন্তত নয়টি প্রকল্পের কাজ অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

২০১৯ সালের ২৩ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৭ মার্চ পর্যন্ত পটিয়ার পিআইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সুপ্তশ্রী সাহা। বর্তমানে তিনি রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় কর্মরত আছেন।

২০২২ সালের ২৩ মে থেকে পটিয়ার পিআইও সুপ্তশ্রী সাহার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। এরপর গত ২১ জুন স্মারক নম্বর ০৫.৪২.১৫০০.২০৭.০৮.০১২.২০২২-২৬ মূলে এটি তদন্ত করতে পটিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়।

এর আগে ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পিআইও সুপ্তশ্রী সাহার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও অন্তত নয়টি প্রকল্পের কাজ নয়-ছয়ের অভিযোগ তোলে দুদকে অভিযোগ দেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আবুল কালাম।

জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড হিলচিয়া লোকমান সড়ক সংস্কার প্রকল্প নম্বর বিশেষ টিআর-০১/২৩ এর প্রকল্প বিলের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বরাদ্দকৃত ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আবুল কামাল।

২০২১ সালের ২১ অক্টোবর বিষয়টি জানাজানি হলে পিআইও সুপ্তশ্রী সাহা ওই ৫০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করেন বলে জানা গেছে।

সুপ্তশ্রী পটিয়ায় থাকাকালীন বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। তারমধ্যে টিআর, কাবিখা, কাবিটা, আশ্রয়ণ প্রকল্প, এইচবিবি সড়ক উন্নয়ন ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় মানুষের ঘরবাড়ি নির্মাণ প্রকল্প, ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

এছাড়া এইচবিবি প্রকল্পে রাস্তায় থাকা পুরাতন ইটের দাম সেলভেজ হিসেবে প্রাক্কলনে অন্তর্ভুক্ত না করে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে অর্থ ভাগাভাগি করা এবং ব্রিজ ও ঘরনির্মাণসহ প্রায় তার আওতায় সবকটি প্রকল্পের কাজে নয়-ছয় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে সুপ্তশ্রীর বিরুদ্ধে।

দুদকে দেওয়া অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পটিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আবুল কালাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্তশ্রী সাহা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই।’

তদন্তের বিষয়ে জানতে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল মামুনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও সাড়া মেলেনি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে এসএমএস পাঠিয়েও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সূত্র: চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.