ক্লুলেস হত্যা মামলার হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার সহ আটক ০৬

চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) বিভাগের অভিযানে ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার সহ আটক ০৬ (ছয়) জন এবং হত্যাকান্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার। মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাম্মদ আলী হোসেন মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাম্মদ সামীম কবিরের তত্ত্বাবধানে, সহকারী পুলিশ কমিশনার জনাব কাজী মোঃ তারেক আজিজ এবং পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কায়সার হামিদের নেতৃত্বে বিশেষ টিমের এসআই মোহাম্মদ রাজীব হোসেন, এসআই মোঃ রবিউল ইসলাম, এএসআই তাজুল ইসলাম ও এএসআই রনি মজুমদার ও সঙ্গীয় ফোর্স চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় টানা ২৪ ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে কর্ণফুলী থানায় সংগঠিত ক্লুলেস হত্যাকান্ডের ঘটনার মূলহোতা মোঃ হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদারসহ মোঃ খোকন প্রঃ সোনা মিয়া, মোঃ রফিকুজ্জামান সানি মিয়া প্রকাশ আফরান, মোঃ নজরুল ইসলাম প্রঃ নজু, মোঃ রায়হান ও আব্দুল কাদের জীবনকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার ও ভিকটিম মোঃ কায়েস বিভিন্ন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সোর্স হিসাবে কাজ করতো। প্রায় ৪ মাস পূর্বে তারা মাদক সংক্রান্ত কাজে রাঙামাটির মাদক ব্যবসায়ী পাহাড়ি এক ব্যক্তির নিকট যায়। মাদক (আইস) সংক্রান্তে উক্ত ব্যক্তির সাথে কথা বলে মোঃ হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার ও ভিকটিম মোঃ কায়েস চট্টগ্রাম চলে আসে। পরবর্তীতে মোঃ হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার পুনরায় রাঙামাটিতে উক্ত মাদকব্যবসায়ীর কাছে গেলে মাদকব্যবসায়ীরা তাকে পুলিশের সোর্স বলে আটকে বেদম মারপিট করে এবং তার স্পর্শকাতর স্থানে ইঁট দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলতে চেষ্টা করে। সেখান থেকে সে কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে চট্টগ্রাম চলে আসে। ভিকটিম কায়েসই মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট তার সোর্সের পরিচয় জানিয়ে দিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাহাড়িরা জানায়। পরবর্তীতে হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার ভিকটিম কায়েসকে মেরে ফেলবে বলে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রায় ৩ মাস আগে থেকেই এই পরিকল্পনা করতে থাকে যা কায়েস বুঝতে পারেনি। সে কায়েসকে দেখা করতে বললে কায়েসের সাথে সবসময় ৩/৪ জন লোক থাকায় কয়েকবার চেষ্টা করেও সে কোন ক্ষতি করতে পারেনি। ইত্যবসরে হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার তার ঘনিষ্ঠ একজনের সাথে কায়েসকে কীভাবে হত্যা করবে সে বিষয়ে আলোচনা করে এবং উক্ত ব্যক্তি রাজি হলে তাকে মেরে ফেলা বাবদ এক লাখ টাকা দিবে মর্মে আশ্বাস দেয়। পরবর্তীতে গত ২০/০১/২০২৩ খ্রি. বিকাল ১৬.৩০ ঘটিকায় হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার ভিকটিম কায়েসের মোবাইলে ফোন দিয়ে তাকে মইজ্জারটেক আসতে বলে। ইতোমধ্যে সে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক কায়েসকে মেরে ফেলার জন্য তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে লোকজন নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলে। কায়েস মইজ্জারটেক এসে হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদারের সাথে দেখা করলে সে তাকে চা-নাস্তা খাওয়ায় এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলে এবং ঘোরাঘুরি করে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এরপর সন্ধ্যা পার হলে একটি কাজের কথা বলে ভিকটিমকে সিএনজিতে তুলে কলেজ বাজারের দিকে ঘুরে চরলাক্ষ্যা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পাশে সিডিএ আবাসিক এলাকার সামনে রাস্তায় সিএনজি দাঁড় করিয়ে সিএনজিতে কায়েসকে বসিয়ে রেখে নেমে যায় এবং সে ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে দ্রুত মইজ্জারটেক চলে আসে। হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার দ্রুত মইজ্জারটেক হতে আরেকটা সিএনজি নিয়ে আপ-ডাউন ভাড়ার কথা বলে ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিম কায়েসের বসে থাকা সিএনজির পিছনে এসে অবস্থান নেয়। ইতোমধ্যে তার পরিকল্পনার অংশীদার ঘনিষ্ঠ বন্ধুসহ আটককৃত মোঃ খোকন প্রঃ সোনা মিয়া, মোঃ রফিকুজ্জামান সানি মিয়া প্রকাশ আফরান, মোঃ নজরুল ইসলাম প্রঃ নজু, মোঃ রায়হান এবং আব্দুল কাদের জীবনকে সাথে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মতো সিএনজিতে বসে থাকা কায়েসকে দুইদিক হতে উপর্যুপরি ছুরি এবং ভোমর দিয়ে আঘাত করতে থাকে। ছুরির আঘাতে কায়েস চিৎকার দিয়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে সিডিএ আবাসিক ড্রেনের দিকে দৌড় দেয়। সেখানেও হত্যাকারীরা পুনরায় তাকে ধরে ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। কায়েসের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে তাকে বহনকারী সিএনজি স্টার্ট হতে দেরি করায় হুমায়ুন কবির প্রকাশ মাসুদ তালুকদার তার ভাড়াকৃত সিএনজিতে চারজনকে তুলে নেয় এবং রায়হান ও জীবন মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে তারা সবাই মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.