রিয়ালের দিকে তীর ছুঁড়ে বার্সাকে নির্দোষ দাবি লাপোর্তার

স্পোর্টস ডেস্ক

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এসে বড় ধাক্কা খায় বার্সেলোনা। স্প্যানিশ দৈনিক কাদেনা সার জানায় ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রেফারি কমিটির টেকনিক্যাল ভাইস প্রেসিডেন্ট এনরিকেজ নেগরেইরাকে ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার ঘুষ প্রদান করে বার্সেলোনা। ক্লাবটির এমন দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্প্যানিশ ক্লাবগুলো লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। যেখানে নাম ছিল বার্সেলোনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদেরও। যদিও সম্প্রতি রিয়ালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুপার লিগের জন্য লড়ছিল বার্সা।

অভিযোগ ওঠার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তা সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি। তবে এবার নীরবতা ভাঙলেন তিনি। সোমবার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে বার্সেলোনাকে নির্দোষ দাবী করেছেন তিনি। আর সেই সঙ্গে আঙুল তুলেছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের দিকে।

১৯৯৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্পেনের রেফারিদের টেকনিক্যাল কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন হোসে মারিয়া এনরিকেস নেগরেইরা। ২০০১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে নেগরেইরার কোম্পানি ‘ডিএএসএনআইএল নাইন্টি ফাইভ’-কে বার্সেলোনার পক্ষ থেকে ৭৩ লাখ ইউরো দেওয়ার অভিযোগ আছে। গত ফেব্রুয়ারিতে শুরুতে খবর বের হয়, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে নেগরেইরার কোম্পানিকে ১৪ লাখ ইউরো দিয়েছে বার্সেলোনা।

নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে লাপোর্তা বার্সাকে নির্দোষ দাবী করেছেন। আর রিয়াল মাদ্রিদের দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, তারাই সব সময় রেফারির সাহায্য পায়।

লাপোর্তা বলেছেন, স্পেনের রেফারি কমিটির কর্মকর্তার মালিকানাধীন কোম্পানিকে বার্সেলোনা অর্থ দিয়েছিল স্রেফ পরামর্শের জন্য, কোনো অবৈধ ক্রীড়া সুবিধা নেওয়ার লক্ষ্যে নয়।

তিনি বলেন, ‘আমি এমন একটি ক্লাবের কথা উল্লেখ করতে চাই, যারা বিচারের সময় নিজেরাই আদালতে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। একটি ক্লাব বলছে যে, তারা প্রতারিত বোধ করছে। একটি ক্লাব, রিয়াল মাদ্রিদ, যাদের প্রতি বরাবরই (রেফারির) পক্ষপাত ছিল। ক্ষমতার নৈকট্যের কারণে যারা শাসকগোষ্ঠীর দল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।’

লাপোর্তা আরও বলেন, ‘তারা রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষমতার কাছাকাছি ছিল। আমি মনে করি এটি উল্লেখ করা উচিত যে, সাত দশক ধরে রেফারিদের টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতিদের বেশিরভাগই রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক সদস্য বা খেলোয়াড়। ৭০ বছর ধরে যারা রেফারিদের দায়িত্ব দিয়েছিল, তারা রিয়ালের সাবেক সদস্য বা খেলোয়াড় ছিল।’

নিজেদের সব অর্জনে কৃতিত্ব কেবল বার্সেলোনারই। তাদের পরিশ্রমের বলেন লাপোর্তা। ‘আমাদের ১২৩ বছরের ইতিহাসে বার্সেলোনা সবসময় মাঠে এবং বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই ফেয়ার-প্লে মডেল হিসেবে থেকেছে। আমরা এত দশক ধরে যা কিছু জিতেছি, তা নিঃসন্দেহে প্রচেষ্টা, প্রতিভা এবং জ্ঞানের ফল। আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে, বার্সেলোনা সুবিধা নেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিযোগিতার পরিবর্তনের অভিপ্রায়ে কোনো কাজ করেনি। যদি বার্সেলোনার বাইরে এমন কোনো ব্যক্তি থাকে যারা অনিয়ম করার জন্য এই প্রেক্ষাপটের সুযোগ নিয়েছে, তাহলে ক্লাবই প্রথমে সম্পূর্ণ তদন্ত করবে। আমাদের ভাবমূর্তি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’—যোগ করেন বার্সা প্রেসিডেন্ট।

নেগরেইরার কোম্পানির কর নিরীক্ষণের পর স্পেনের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস ঘটনার তদন্ত করছে। প্রসিকিউটর অফিস গত মাসে বার্সেলোনা ও ক্লাবটির সাবেক দুই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার কথা জানায়। পরে কাতালান ক্লাবটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল। এর আগে স্প্যানিশ লা লিগার সকল ক্লাব এক জোট হয়ে অভিযোগ করে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.