ডেসটিনির হারুন-রফিকুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের আদালতে বহুল আলোচিত ডেসটিনির চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিনসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এতে তাদের বিরুদ্ধে ‘ডেসটিনি বৃক্ষরোপণ প্রকল্পের’ নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সোমবার (১৫ মে) দুপুরে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম শরীফুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন মো.রেজা নামে চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি।

মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে- ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যানেন্ট জেনারেল এম হারুন-অর-রশীদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমিন, বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক মোহাম্মদ গোফরানুল হক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামশুল ইসলাম ভূঁইয়া, পটিয়ার শাখা প্রধান সুবোধ চন্দ্র রায় ও তার ব্যক্তিগত সহকারী তপন চন্দ্র দাশ এবং মোহাম্মদ হোসেন নামে অপর এক ব্যক্তি

আদালতের বেঞ্চ সহকারি হারুনুর রশিদ সারাবাংলাকে জানান, আটজনকে আসামি করে দায়ের করা মামলা আদালত গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ১৭ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে মামলার বাদী মো. রেজাকে আসামি সুবোধ চন্দ্র রায় ‘ডেসটিনি ট্রি ট্রান্সপ্লান্টশেন লিমিটেডে’ অর্থ বিনিয়োগ করলে তার দ্বিগুণের বেশি টাকা পাওয়া যাবে বলে জানায়। বিশ্বাস করাতে তাকে বেশকিছু সরকারি সনদপত্রও দেখানো হয়। পরে রেজা তাদের কথায় ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে কয়েক দফায় মোট ৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন।

২০১৩ সালের ১৫ অক্টোবর সকালে আসামি সুবোধ তাকে কল দিয়ে এক মাস পর লভ্যাংশ পরিশোধের কথা জানায়। কিন্তু পরে তাকে কল দিয়ে আর পাওয়া যায়নি। বাদী খোঁজখবর নিলে জানতে পারে, আসামি বাসা ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে গেছে।

পরে ঢাকায় গিয়ে তিনি জানতে পারেন ডেসটিনির বিভিন্ন প্রতারণার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলায় বেশ কয়েকজন জেলে আছেন। সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ তখন জামিনে থাকলেও তার সাথে তিনি এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এই ঘটনার পর তিনি আসামিদের নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। তবে সেদিক দিয়ে আসামিরা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে টাকা ফেরত না দেওয়ার নানা অপকৌশল গ্রহণ করে।

মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমিনসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা করে দুদক। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

দুদকের মামলাসহ এ সংক্রান্ত আরও বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে কারাগারে আছেন রফিকুল আমীন। চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশীদ জামিনে আছেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.