নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচনে অপপ্রচার রোধে ফেসবুক প্রচারণা হবে ইসির নিয়ন্ত্রণেবাদাম যেভাবে খেলে উপকার পাবেন দ্বিগুণ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমা নয়, টেলিফিল্মের চেয়ে একটু কিছু বেশিনরসিংদীতে সড়কে ঝরল ৩ প্রাণরাবিতে আন্তর্জাতিক পাবলিক হেলথ কনফারেন্স শুরুস্ত্রীকে লঞ্চে উঠিয়ে দিয়ে ফেরার পথে সড়কে নিথর চিকিৎসকহাসপাতালে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমার আদা শর্মাউপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃত’ করার অভিযোগে সাংবাদিক বহিষ্কারপ্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিচ্ছেদ হয়েছিল ট্রুডোর মা-বাবারও‘ভিডিও ধারণ’ নিয়ে বাগবিতণ্ডা, ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকের‘ভিডিও ধারণ’ নিয়ে বাগবিতণ্ডা, ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকেরনির্বাচনে অপপ্রচার রোধে ফেসবুক প্রচারণা হবে ইসির নিয়ন্ত্রণেবাদাম যেভাবে খেলে উপকার পাবেন দ্বিগুণ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমা নয়, টেলিফিল্মের চেয়ে একটু কিছু বেশিনরসিংদীতে সড়কে ঝরল ৩ প্রাণরাবিতে আন্তর্জাতিক পাবলিক হেলথ কনফারেন্স শুরুস্ত্রীকে লঞ্চে উঠিয়ে দিয়ে ফেরার পথে সড়কে নিথর চিকিৎসকহাসপাতালে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমার আদা শর্মাউপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃত’ করার অভিযোগে সাংবাদিক বহিষ্কারপ্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিচ্ছেদ হয়েছিল ট্রুডোর মা-বাবারও‘ভিডিও ধারণ’ নিয়ে বাগবিতণ্ডা, ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকের‘ভিডিও ধারণ’ নিয়ে বাগবিতণ্ডা, ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকের
সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বনাশা মাদক। বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা। শুধু শহর নয়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যায়। মাদকের প্রভাব সামাজিক বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মাদকের অপব্যবহার শুধু মাদকেই সীমিত থাকে না, আরো বহু অপরাধের কারণ হয়। অন্যদিকে মাদকসেবীরা যেমন পরিবারের জন্য, তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁঁড়ায়। সময়ের ব্যবধানে মাদকের উপকরণে বদল ঘটছে।
মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৮৫ থেকে ৯০ লাখ।
সরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাবে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭৫ থেকে ৮০ লাখ। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী করা ডোপ টেস্টে নির্দিষ্ট কিছু মাদক শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে ইয়াবা, মদ, ফেনসিডিল, গাঁজা, এলএসডি ও ঘুমের ওষুধ অন্যতম। মূত্র পরীক্ষার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি যদি শেষ ১০ দিনে কোনো মাদক গ্রহণ করে থাকেন, তা জানা যায়।
মাদকপাচারের প্রধান দুটি আন্তর্জাতিক রুটের একটি রয়েছে বাংলাদেশে। ফলে বাংলাদেশেও মাদকের উপস্থিতি ক্রমেই বাড়ছে। নতুন নতুন মাদকও আসছে নানা পথে। শহর ছাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলেও তরুণসমাজে মাদকাসক্তি ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। যেকোনো মাদক ব্যবসায়ীর প্রধান লক্ষ্য উঠতি বয়সী কিশোর ও তরুণরা। অন্যদিকে মাদকাসক্তরাও জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে।
পেশাদার গাড়িচালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। নির্ভরযোগ্য তথ্য বা গবেষণা না থাকলেও জনমনে এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত যে গাড়িচালকদের একটি অংশ মদ বা অন্য কোনো মাদক খেয়ে গাড়ি চালায়। অনেক চালক গাড়ি চালানোর সময় বেসামাল থাকেন। ডোপ টেস্টের আওতায় আনলে চালকরা মাদক কম নেবেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমবে। সরকারি চাকরিজীবীদের কেউ কেউ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন, এমন খবর গণমাধ্যমেও এসেছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে গত জুন মাসে ডোপ টেস্ট করা হয় আট হাজার ৩৪৭ জনের। এর মধ্যে পজিটিভ হন ৬০৮ জন। এর ৬০৬ জনই গাড়িচালক। এটা মোট পরীক্ষার ৮.৩৪ শতাংশ। এর আগে মে মাসে একই সেন্টারে ডোপ টেস্ট করা হয় ১০ হাজার ৩৭ জনের। এর মধ্যে মাদকাসক্ত শনাক্ত হয় ৬৩০ জনের। এই সংখ্যা মোট পরীক্ষার ৬.৭ শতাংশ। তাঁদের সবাই গাড়িচালক।
মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। মাদকদ্রব্য কেনাবেচা ও সেবন রোধে প্রণীত ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮’-এ মাদকাসক্ত শনাক্তে পরীক্ষা (ডোপ টেস্ট) করার বিধান রাখা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মাদকাসক্ত ব্যক্তি শনাক্তের জন্য মাদকাসক্তি পরীক্ষা বা ডোপ টেস্ট করতে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করার কথা। চালকদের মাদক থেকে রক্ষা এবং সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে ডোপ টেস্ট করা প্রয়োজন। কাজেই বিধিমালা প্রণয়নের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে অন্ধকারাচ্ছন্ন হচ্ছে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজতে হবে এখনই। শুধু ধরপাকড় নয়, একদম গ্রাম পর্যায়ে মাদকের চাহিদা হ্রাস ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের কাজ করতে হবে। এ কাজে মসজিদের ইমাম, শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
মাদক দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্যও মূর্তমান হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ইয়াবা ব্যবসা অনেকটাই অপ্রতিরোধ্য রূপ নিয়েছে। রাজধানী থেকে শুরু করে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এর বিস্তৃতি। দেশের এমন কোনো এলাকা খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে মাদকের থাবা নেই। এই মরণ নেশার বিস্তারে সমাজে একদিকে যেমন অপরাধ বাড়ছে, তেমনিভাবে নষ্ট হচ্ছে সামাজিক শৃঙ্খলা। মাদকের সংক্রমণ, মাদকের ব্যাধি ধীরে ধীরে আমাদের জাতিকে ভেতর থেকে নিঃশেষ করে ফেলার আগেই যদি আমরা একে প্রতিরোধ করতে না পারি, তাহলে বর্তমান প্রজন্ম এবং দেশের ভবিষ্যৎ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। দেশের বিরাটসংখ্যক তরুণশক্তি নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখছি, অথচ প্রতিনিয়ত মাদকের নেশায় ধ্বংস হচ্ছে তারুণ্য, জাতির ভবিষ্যৎ। প্রশাসনিক কঠোর অবস্থান, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং জনসচেতনতাই পারবে মাদকের শিকড় উপড়ে ফেলে এর বিস্তার ঠেকাতে। সর্বোপরি মাদকের বিরুদ্ধে কার্যকর অভিযান এই মুহূর্তে জরুরি।
আমাদের পূর্ব দিকের কয়েকটি দেশে মাদকের বিস্তৃতি রয়েছে। উৎপাদনও হয়। বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে মাদক পশ্চিমে যায় বলে তথ্য পাওয়া যায়। দেশেও মাদক আসে মূলত পূর্ব দিক থেকেই স্থল ও নৌপথে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশে মাদকের বিস্তার রোধ করতে হলে এর রুট বন্ধ করতে হবে, মাদকের অনুপ্রবেশ রোধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দ্রুততর করতে হবে। আইনের দুর্বলতা ও ফাঁকফোকর বন্ধ করতে হবে। মাদক কারবারের হোতাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তৃতীয়ত, দেশে মাদকাসক্তদের উন্নত ও কার্যকর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। চতুর্থত, উচ্চ শিক্ষাঙ্গনে ভর্তি, চাকরি, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানসহ নানা ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করতে হবে। পঞ্চমত, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাদক নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে যুক্তদের কাজকর্মের জবাবদিহি বাড়াতে হবে।
দেশের কিশোর-তরুণদের রক্ষায় মাদকের সহজলভ্যতা দূর করতেই হবে। একই সঙ্গে সুস্থ বিনোদনের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। পরিবারকে আরো সচেতন হতে হবে। আমরা চাই দেশে উন্নয়নের যে সূচনা হয়েছে, তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় দেশকে মাদকমুক্ত রাখার ব্যাপারে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।
লেখক: দয়াল কুমার বড়ুয়া, কলামিস্ট ও জাতীয় পার্টি নেতা, সভাপতি, চবি অ্যালামনাই বসুন্ধরা। সংসদ সদস্য প্রার্থী ঢাকা-১৮ আসন।