মো:আলমগীর লোহাগাড়া
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের নোয়ারবিলা এলাকায় পুরাতন ঘরের সীমানা বিরোধের জেরে মধ্যযুগীয় কায়দায় কোদাল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে শিক্ষিকা শাহিন আক্তার গং, এতে ৩ জন গুরুতর জখমসহ ৫ জন আহত হয়।
১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টার সময় লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের নোয়ার বিলা বাজারের উত্তর পাশে সিকদার পাড়া চকিদারের ভিটা নামক স্থানে বাড়ির আঙ্গিনায় ঘটনাটি ঘটে। আহতরা হলেন ১. হাসিনা আক্তার, ২. পারভিন আক্তার, ৩. কুলছুমা আক্তার, ৪. খতিজা বেগম, ৫. আনোয়ারা বেগম, তারা সকলেই আব্দুল গনির মেয়ে।
ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম বলেন- বিরোধীয় জায়গায় জবর দখলের চেষ্টা করলে সেখানে আমরা বাঁধা প্রদান করি, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্র দা, কোদাল, লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে আমাদের উপর এলোপাতাড়ি হামলা চালালে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ি, পরে স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার করে করে লোহাগাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়, ২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়, গুরুতর আহত ৩ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। ঘটনার পর ঐ স্থানে পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করে পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ ডায়াল করলে এস আই মোজাম্মেল এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এই ঘটনায় লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের ডাক্তার সাবরিন জাহান রেশমি জনবানীকে বলেন গুরুতর আহত অবস্থায় ৫ জন ভর্তি হয়েছিল তন্মধ্যে ২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি বাকি ৩ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় হাছিনা আক্তার বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্যাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন, যাহা ১৭ সেপ্টেম্বর লোহাগাড়া থানায় নথিভুক্ত করা হয়, অত্র মামলায় আসামিরা হলেন যথাক্রমে- ১. বদরুদ্দীন(৪০) তিনি একজন সরকারি চাকুরে, ২. জহির উদ্দীন(৩১), ফরিদ উদ্দীন(৪৫), তারা একই এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে, অপর আসামি চরম্বা নোয়ারবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহিন আক্তার, সে ১ নং আসামি বদরুদ্দীনের স্ত্রী। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে শিক্ষিকা শাহিন আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেন।
ঐ দিন ঘটনার পর স্কুল চলাকালীন সময়ে নোয়ারবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনার ৪ নং আসামি শাহিন আক্তারের খোঁজ করা হলে স্কুলে তাকে পাওয়া যায়নি, তার বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা (ভারপ্রাপ্ত) শাহেদা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে একটি শাহিন আক্তার স্বাক্ষরিত আবেদন দেখান, যেখানে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর বা অনুমোদন নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেনের সাথে মুটোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে লোহাগাড়া থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) অত্র মামলার আইও মোজাম্মেল হোসেন জানান আসামিদের আটকের জন্য অভিযান করেছি, ৪ নং আসামি শাহিন আক্তার জামিনে আছেন, অপরাপর আসামীগণ পলাতক থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি, তিনি আরও বলেন আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।