সাতকানিয়ার এওচিয়ায় হামুনের সপ্তাহ পরেও স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ

এওচিয়া ছড়ারকুল

 

সৈয়দ আককাস উদদীন

ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতের ৬ দিন পার হলেও সাতকানিয়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বিদ্যুতের অভাবে চালানো যাচ্ছে না মোটর চালিত পাম্প। ফলে পানির জন্য হাহাকার চলছে। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে মানুষ।

দুর্গত অনেক এলাকায় ভেঙে যাওয়া গাছ ও ডালপালা এখনও সরানো শেষ হয়নি। এতে বসতবাড়ি সংস্কারের চেষ্টারত লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে সাতকানিয়ায় গাছ ভেঙে চলাচলে যেমন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে– তেমনি জটিল করে দিয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রক্রিয়াও। ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় ৯০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে ও উপড়ে গেছে। ৩৫০টি স্পটে গাছ পড়ে ছিড়েছে তার। নষ্ট হয়েছে ৮০০টি মিটার।

ছয় দিন পরও উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব না হওয়ায় সেখানকার বাসিন্দারা এখনও বিদ্যুৎবিহীন।

পল্লী বিদ্যুতের সাতকানিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. সাইফুল আলম জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খুঁটি থেকে খুটি এভাবে লাইন চেক করে বিদ্যুৎ চালু করা হচ্ছে। বর্তমানে বেশিরভাগ এলাকায় লাইন চালু করা হয়েছে। অন্যান্য এলাকায় এখনো বন্ধ রয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে চালু করতে পারবো।

বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। সাতকানিয়া পৌরসভার ভোয়ালিয়া পাড়া, সামিয়ার পাড়া, খাগরিয়ার মাইজ পাড়া, ছদাহার বহনা মুড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির জন্য চলছে হাহাকার।

ভোয়ালিয়া পাড়ার আয়াত নামের একজন জানান, বুধবার থেকে পানি সংকট রয়েছে এখানকার বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার ফলে পাম্প চালু না থাকায় পানি ওঠানো যাচ্ছে না।

উপজেলার মির্জাখীল সড়কে ও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে বসতি ও সড়কের উপর উপড়ে পড়া গাছ এখনও রয়েছে। যা সরানোর কাজ করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার।

ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান চৌধুরী জানান, তার ইউনিয়নের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। তবে এখনো অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন।

গত মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে সাতকানিয়ায় গাছ উপড়ে পড়ে বিধ্বস্ত হওয়া বসতঘরের চালের নিচে চাপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়। তার নাম বকুমা খাতুন (৬৫)। তিনি উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মাঝের পাড়ার মৃত নুর আহমদের স্ত্রী।

এছাড়া, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দুই শতাধিক বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। খুঁটি উপড়ে ও ভেঙে যাওয়ায় এবং সঞ্চালন লাইনের উপর গাছ ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.