থানায় জিডি করেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্দেশে নৌকার বহরে হামলা

সংবাদ সম্মেলনে নদভীর অভিযোগ

 

লোহাগাড়া প্রতিনিধি

নির্বাচনী প্রচারণা, গণসংযোগে হামলা ও বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বলেছেন, সাতকানিয়ায় নৌকার সমর্থকদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া এবং অস্ত্রের ঝনঝনানি শুরু হয়েছে।

নৌকাকে তারা ডুবিয়ে দিতে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে উঠেপড়ে লেগেছে। আওয়ামী লীগ বিক্রি করে টাকার খেলায় মেতে উঠেছে। ডা. মিনহাজ ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড চেয়ারম্যান সুমন ও সহযোগি চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ ও নির্বাচনী পরিবেশকে ধ্বংস করছেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. নদভী বলেন, সাতকানিয়ায় নৌকার সমর্থকদের উপর একের পর এক হামলার ঘটনা সুষ্ঠু পরিকল্পনা অনুযায়ী করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, বহিরাগত সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য প্রশাসনকে অবগত করলেও রহস্যজনক কারণে অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। অথচ চরতিসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী অপ্রীতিকর ঘটনার আগে ও পরে প্রশাসনকে অবগত করলেও তারা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

নদভী আরো বলেন -মোতালেবের সমর্থকরা ঘটনার দিন থানায় একটা জিডি করেছে, আর ওই জিডি করেই পরিকল্পিতভাবে আমার প্রচারের গাড়ীবহরে হামলা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আবু রেজা নদভী এমপির স্ত্রী ও নির্বাচন পরিচলনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রিজিয়া রেজা চৌধুরী বলেন, অতীতের ১০ বছরে সাতকানিয়ার জনপদের মানুষ নিরাপদে ছিল। এমপি নদভীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফল স্বরূপ নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে স্বতঃস্ফূর্ততায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিরোধি অপশক্তি নৌকার বিরুদ্ধে চক্রান্তে নেমেছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব নৌকার বিরুদ্ধে অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ও অকথ্যভাষায় বিষেদাগার করে বেড়াচ্ছন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে মোতালেবকে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার জনগণ যখন প্রত্যাখ্যান করেছে ঠিক সে সময় তাঁর (মোতালেব) নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জনগণের ঘরবাড়িতে হামলা ও লুটপাট শুরু করেছেন।

অপরদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চরতির কাটাখালি ব্রীজ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে ৮নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সন্ত্রাসী সাইফুল, মোস্তফা, নজরুল ইসলাম ও লম্বা ফারুকসহ ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী রিজিয়া রেজাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

হামলায় চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নানসহ ২০/২৫ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয় বলে জানান তিনি।

হামলার অভিযোগের বিষয়ে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের প্রধান নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মেম্বারের দ্বন্দ্ব দীর্ঘসময় ধরে ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। এর সাথে রাজনীতি বা আসন্ন নির্বাচনের আদৌ কোন সম্পর্ক নেই। এ ঘটনার কোন দায় তাই কোনমতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর নয়।

এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী আবু রেজা নদভী সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি মিথ্যা ও বানোয়াট কথা, আমার শ্যালক রুহুল্লাহ চৌধুরী চরতি ইউপি চেয়ারম্যান হলেও তাঁকে আমি দিকনির্দেশনা দিয়ে পরিচালিত করতাম। সে একজন ভালো মানুষের সন্তান, রুহুল্লা কখনোই বালু ব্যাবসার সাথে যুক্ত ছিলোনা বরং হামলাকারী চরতী ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম এর সিন্ডিকেট বালু ব্যাবসা সহ সকল অপকর্মের সাথে জড়িত, তাদের কাছে অনেক অবৈধ অস্ত্র আছে।

সংবাদ সম্মেলনে আনীত অভিযোগের বিষয়ে স্বতস্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সমন্বকারী ডা. আ.ম.ম. মিনহাজুর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব এবং আমার নিজস্ব কোন সন্ত্রাসী বাহিনী ও সেকেন্ড ইন কমান্ড নাই, তবে সাধারন নীরিহ ভোটাররাই আমাদের শক্তি। যারা আগামী ৭ জানুয়ারী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত অংশগ্রহন মূলক নির্বাচনে আমাদের পক্ষে ঈগল প্রতীকে ভোট বিপ্লব ঘটাবেন।

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকালে স্থানীয় একটি রেষ্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক এড. জহির উদ্দিন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. মির্জা কচির উদ্দিন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আবছার চৌুধুরী, উপ দপ্তর সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মৃদুল কান্তি দাশ, দপ্তর সম্পাদক সাইদুর রহমান দুলাল, লোহাগাড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুচ্ছফা চৌধুরী, এড. আবু জাফর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক হারেজ মোহাম্মদ, পৌরসভা যুবলীগ সভাপতি আনিসুর রহমান, সাধারন সম্পাদক জাবেদ ইকবাল, সাতকানিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাফসান আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়ার ফারুক ইমু সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.