উন্নত জীবনযাপন ও সমৃদ্ধ”চট্টগ্রাম ১৫ আসন”গড়ার স্বপ্ন নিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করলেন: স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব

নিজস্ব প্রতিবেদক 

উন্নত জীবনযাপন ও সমৃদ্ধ সাতকানিয়া লোহাগাড়া’র স্বপ্ন নিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব

চট্টগ্রাম-১৫ আসনের (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আংশিক) স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ মোতালেব নির্বাচনী ইশতিহার ঘোষণা করেছেন। তাঁর নির্বাচনী ইশতিহারে শিল্পোন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পরিকল্পিত যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলসহ নানা বিষয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেছেন। শুক্রবার বিকেলে সাতকানিয়া উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে জণাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ নির্বাচনী ইশতিহার ঘোষণা করেন।
ইশতিহার ঘোষণা উপলেক্ষ্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলে তিনি বলেন, আমি প্রার্থী হয়েছি মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার জন্য। কোন বৈষয়িক লাভ সুফল আশা করে আমি জনসেবায় নামিনি। আপনারা আমাকে চেনেন। পঞ্চাশ বছর ধরে যখন যে অবস্থায় ছিলাম সর্বদা মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। আজও আমি আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছি কেবল মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছিয়ে দেয়া অঙ্গীকার নিয়ে। সাতকানিয়া-লোহাগাড়া এখনও অনেক পিছিঁয়ে পড়া জনপদ। সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় আধুনিক শিল্পাঅঞ্চল গড়ে তুলব। ভারী ও মাঝারি শিল্প স্থাপন করে এতদাঞ্চলে শিল্পায়নের নতুন দিগন্ত উম্মোচিত করবো। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে এই এলাকার অবদান ও সুনাম বৃদ্ধি পাবে। পরিকল্পিতভাবে যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। সরু রাস্তাগুলোকে প্রশস্ত করা হবে। আরকান মহাসড়ক সম্প্রসারিত ও যানজট মুক্ত করতে ফ্লাইওভার, আন্ডারপাশ ও এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। অভ্যন্তরীন সড়ক অবকাঠামোর প্রভূত উন্নয়ন করা হবে। কৃষক ও কৃষি সুরক্ষার নানামূখী প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এই অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানী করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উন্নত কৃষি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন সার বীজ সরবরাহ করা, বিনামূল্যে কৃষকদের কৃষি উপকরণ বিতরণ, উৎপাদিত পণ্যের সংরক্ষণ ব্যবস্থা, কৃষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবিকার নিশ্চয়তা এবং জীবনমান উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রবাসী ভাই তথা রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য পৃথক হেল্পডেস্ক স্থাপন করে তাদের সুখে দুঃখে সম্পর্ক মূলক ভূমিকা বৃদ্ধি করা হবে। বিপদে আপদে ও অসুস্থ প্রবাসীদের পাশে থেকে তাদের সর্বোচ্ছ সহায়তা দেয়া হবে। চট্টগ্রাম ১৫ এলাকার গরীব দুঃস্থ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারী হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হবে। বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরণ ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচিগ্রহণ করা হবে। ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হবে। ডলু ও সাঙ্গু নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে জনবসতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা হবে।
কোন চিহ্নিত অপরাধী মাস্তান সন্ত্রাসীর ঠাঁই চট্টগ্রাম ১৫ অঞ্চলে হবে না। সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী, নিপীড়নকারীদের যে কোন মূল্যে আইনের আওতায় আনা হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা হবে।
সরকারী সকল বরাদ্দ স্বচ্ছতার মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। দুর্নীতির দুষ্ট চক্রভেঙ্গে সুশাসনের পথে সুষম বন্টনের নীতিতে উন্নয়ন করা হবে। জনগনের জানমালের সুরক্ষায় আইনশৃঃখলা বাহিনীকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দেয়া হবে। মাদক বিক্রেতা দমন, সন্ত্রাসীদের দখল বেদখলসহ সকল অনৈতিক, সমাজ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্মকান্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদর্শন করে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সুখে দুঃখে পাশে থাকবো। অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ খরচে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মিত করা হবে। এলাকায় মসজিদ, কবরস্থান, মাদ্রাসা, মক্তব তথা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সুনিদিষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হবে। আলেম সমাজ ও সকল ধর্মের পন্ডিত ব্যক্তিদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দির উন্নয়ন ও মন্দির ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো হবে। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় গুলোকে বিশেষ সহায়তার আওতায় জীবনমান উন্নয়নে সম্ভব সকল কিছু করা হবে। তাদের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে সহায়তা দেয়া হবে। চট্টগ্রাম ১৫ এলাকা ‘শিক্ষাবান্ধব এলাকা’ হিসেবে গড়ে তুলতে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন অনুপাতে গড়ে তোলা হবে। বিদ্যামান শিক্ষা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। হাতের কাছেই সুশিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব। বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষার বিকাশে কারিগরি মহাবিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে। চুনতি অভয়ারণ্য আরো সুসজ্জিত সুরক্ষিত করা হবে। নতুন ইকোপার্ক গড়ে তোলা হবে। পরিবেশ বান্ধব কর্মসূচি নেয়া হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। সাতকানিয়া আদালতের জন্য নতুন ভবন স্থাপন, আইনজীবীদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন ও দরিদ্রদের আইনী সহায়তা বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইনী সেবা হয়রানী মুক্ত করতে সচেষ্ট হবো।
সালিশ বিচারের নামে হয়রানী থেকে মানুষকে রক্ষা করা হবে। বিশুদ্ধ পানীয় সরবরাহের জন্য ওয়াসার আদলে নতুন প্রকল্প স্থাপন করা হবে। ঘরে ঘরে পানি পৌঁছে দেয়ার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে সুন্দর চট্টগ্রাম-১৫ গড়ে তোলার জন্য সড়ক ডিজাইন ও আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে। নিরাপদ ও সুন্দর সাতকানিয়া-লোহাগাড়া হবে ভ্রমণপ্রিয় মানুষের জন্য নতুন গন্তব্য, সেই লক্ষ্য নিয়ে এলাকাকে সুসংগঠিত করা হবে।

ডিজিটাল চট্টগ্রাম ১৫ গড়ে তোলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তথ্য প্রযুক্তি খাতে তরুণ যুবকদের কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্টান ও হাইটেক পার্ক নির্মাণ করে এই খাতে তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
এসময় অন্যদের উপস্থিত ছিলেন এমএ মোতালেবের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, প্রার্থীর সাতকানিয়া অংশের নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান আহমদ সাইফউদ্দিন সিদ্দিকী,সচিব ও সাতকানিয়ার পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের,লোহাগাডা অংশের চেয়ারম্যান ও লোহাগাডা আওয়ামী লীগ’র সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন হিরু,জেলা আ’লীগ সদস্য রূপ কুমার নন্দী খোকন, কেন্দ্রীয় আ’লীগ ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য সন্তোষ মল্লিক, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সহসসভাপতি এডভোকেট প্রদীপ চৌধুরী,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ লিটন, জসিমউদ্দিন, হোসেন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আলম, মো. শাহজাহান, কোষাধ্যক্ষ ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম উদ্দিন, সম্পাদক নজরুল সিকদার, সদস্য রেজাউল করিম চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম,পৌরসভা আ’লীগ সভাপতি আবদুল গফুর লালু,সা. সম্পাদক একে এম আসাদ, ইউ পি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, রমজান আলী আবু সালেহ, জসীম উদ্দিনসহ অন্যান্য আওয়ামীলীগ ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।

#####

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.