তথ্যের আবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিক কারাগারে, তদন্ত করবে কমিশন

তথ্যের আবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিক কারাগারে, তদন্ত করবে কমিশন

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) প্রধান তথ্য কমিশনার আব্দুল মালেক এই তথ্য জানান।

তিনি জানান, তথ্য প্রাপ্তির আবেদন করতে গিয়ে শেরপুরের নকলা’য় সাংবাদিক কারাগারে- সংবাদটি আমলে নিয়ে তথ্য কমিশন স্ব-প্রণোদিত হয়ে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি সময় সংবাদকে জানান, আমাদের একজন কমিশনারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উনি রোববার সেখানে যাবেন। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তিনি একটা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরে ‌‘তথ্য চেয়ে আবেদন করে দেশ রূপান্তর সাংবাদিক জেলে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, দেশ রূপান্তরের শেরপুরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এই দণ্ডাদেশ দেন।

রানার স্ত্রী বন্যা আক্তার বুধবার রানার সঙ্গে শেরপুর কারাগারে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের জানান, জাইকার কয়েকটি প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ের তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে সম্প্রতি ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন করেন রানা। এসব প্রকল্পের তথ্য চাওয়ায় রানার ওপর ক্ষুব্ধ হন ইউএনও।

আরও পড়ুন: সাংবাদিককে ‘গ্রেফতারের হুমকি’ দিলেন গোমস্তাপুর ইউএনও

বন্যা আক্তারের বরাতে দেশ রূপান্তর জানিয়েছে, আবেদনটি কার্যালয়ের কর্মচারী গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভড কপি চান রানা। শীলা তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। রানা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার শীলার কাছে রিসিভড কপি চান। তখন শীলা বলেন, ‘ইউএনওকে ছাড়া রিসিভড কপি দেয়া যাবে না।’ পরে রানা জেলা প্রশাসককে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। এতে ইউএনও আরও ক্ষিপ্ত হন। এ সময় ইউএনও রানাকে ভুয়া সাংবাদিক এবং তার ছেলে মাহিনকে ‘বাপের মতো চোর সাংবাদিক হবি’ বলে উক্তি করেন।

এক পর্যায়ে নকলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউএনও এবং সিএ শীলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে রানাকে গ্রেফতার করে। পরে নকলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।

এ বিষয়ে নকলা ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনের সঙ্গে কথা বলেছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশ রূপান্তর। তিনি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, ‌’সাংবাদিক রানা তথ্য চেয়ে আবেদন করতে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি তখনই তথ্য চান। আমি তাকে বলি, এখন আমার মিটিং আছে। তথ্য দেয়ার জন্য আমার হাতে ২০ দিন সময় আছে। কিন্তু রানা সিএ শীলার কাছে থাকা ওই তথ্যের ফাইল টানানটানি করেন। তিনি অসদাচরণ করেছেন। এতে অফিসের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তাই আমি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বলেছি।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.