শহীদ ছাত্রলীগ নেতাদের আত্মত্যাগের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত

হাসানুল করিম মানিকের স্মরণসভায় মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, কঠিন আওয়ামী দুঃসময়ে যে সকল ছাত্রলীগ নেতা নিজের জীবনকে বাঁজি রেখে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে শরিক হয়ে দেশ, দল, জাতিকে পুনরুদ্ধারে অবদান রেখে গেছেন তাঁরাই আমাদের আদর্শিক চেতনার ভিত্তির সোপান। ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ স্পৃহায় প্রতিরোধ যুদ্ধে পুরোভাগে ছিলেন তরুণ ও যুবকরা।

ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অনেক নিবেদিত প্রাণকর্মী যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের নামগুলো বিস্মৃত প্রায় হলেও তাঁরাই আমাদের অস্তিত্বের অহংকার। স্বৈরাচার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এঁদের অবদানের কথা এখনো স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করে। ছাত্রলীগ নেতা হাসানুল করিম মানিকের মত আরো অনেক শহীদ ছাত্রনেতার মুখগুলো এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠলে আঁতকে ওঠি।

আমরা কোথায় ছিলাম আর এখন কোথায় আছি। এখন যেখানে আছি সেই অবস্থানটা তৈরি হয়েছে শহীদ ছাত্রলীগ নেতাদের আত্মত্যাগ ও আত্ম বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। তাঁদের এই আত্ম বিসর্জনের কথা ইতহিাসের পাতায় অবশ্যই স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

মঙ্গলবার (২১ মে) বিকাল ওমরগণি এমইএস কলেজে ছাত্র সংসদের ভারপ্রাপ্ত ভিপি হাসানুল করিম মানিকের ৩৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শহীদ ছাত্রনেতা হাসানুল করিম মানিক স্মৃতি সংসদের আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সভাপতিত্বে এবং সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাড. এ. এম কুতুব উদ্দিন চৌধুরী ও পংকজ রায়ের যৌথ সঞ্চালনায় নগরীর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব বঙ্গবন্ধু হলে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

মেয়র বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এমইএস কলেজ ছিল ছাত্রলীগের একটি প্রতিবাদী দুর্গ। এই দুর্গের উপর বার বার হামলা এসেছে। বর্বরোচিত হামলায় শহীদ হয়েছেন রবিউল হাসান বেলাল, চন্দন ভোমিক, মইনুল করিম, মহিম উদ্দিন, কাসেম, কায়সার, এনাম, মনসুর, শহীদ, পুলক, রাসেল, বাপ্পিদের মত প্রথম সারির সাহসী ছাত্রলীগ নেতাগণ। ঐ সময়ের হামলা ও মামলায় নির্যাতিত, নিপীড়িত অনেক ছাত্রনেতা এখনো বেঁচে আছেন। তাঁদের যথার্থ মূল্যায়ন অবশ্যই হওয়া উচিত। যদি না হয় তাহলে আমরা বিবেকের কাছে দায় থাকব।

বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মো. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, আমি খুব কাছ থেকে শহীদ ছাত্রলীগ নেতা হাসানুল করিম মানিককে দেখেছি। এই দুঃসাহসী ছাত্রলীগ নেতা আমার প্রতিবেশী ছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে কোনো কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলার হিম্মত রাখতো। মৃত্যু তাঁর কাছে ছিল অতি তুচ্ছ। মানিক আমাদের কাছে ত্যাগ ও আত্ম বিসর্জনের একজন ধ্রুবতারা।

বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর বলেন, আমরা প্রয়াত জননেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী’র নির্দেশনায় রাজপথ কাঁপানো কর্মী ছিলাম। এই সাহসী কর্মীদের মধ্যে অন্যতম হাসানুল করিম মানিক। আমরা মানিকের মত যাঁরা রাজপথে সক্রিয় ছিলাম তাঁরা কখনো কিছু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করিনি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যে বাংলাদেশ পাকিস্তানী ভাবধারায় পরিচালিত হচ্ছিল সেই কালো অধ্যায় থেকে মুক্তি পেয়ে আলোকোজ্জ্বল। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ আলোর পথের অভিযাত্রী। এই অভিযাত্রায় হাসানুল করিম মানিকসহ আরো সে সকল শহীদের ছাত্রলীগ নেতা শহীদ হয়েছেন তাঁরা আমাদের অবশ্যই ভয় ও কঠিনকে জয় করার শক্তি যোগাবে।

স্মরণসভায় আরো বক্তব্য রাখেন এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো. ইউনুছ, সাবেক জিএস কে.বিএম শাহজাহান, এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন খন্দকার, কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মশিউর রহমান রোকন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি নুরুল আনোয়ার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মনোয়ার জাহান মনি, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শিবু প্রসাদ চৌধুরী, মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সামদানি জনি, ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম, হাসমত খান আতিফ, সৌরভ রায়, জুবাইদুল আলম আশিক, জাহিদ হাসান সাইমুন, আবদুল্লাহ আল সাইমুন, অর্ণব দে, হাবিবুর রহমান সুজন, এইচ.এম জাহিদ, মোছাঃ তুস্মি।

উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহিব উল্লাহ, আবু হানিফ, নাজমুল আহসান, পিংকু দেব রায়, ইকবাল করিম সোহান, খায়নাত মোরশেদ কনক, মো. জসিম উদ্দিন, হাজী সেলিম, বিপ্লব মিত্র, রাজীব দত্ত রিংকু, আসিবুর রহমান মুন্না, খোকন চন্দ্র তাঁতী, নুরুল আলম মিয়া, জসিম উদ্দিন, নুর উদ্দিন বাহার বাবু, ফজলুল কবির সোহেল, ইকবাল আহমদ ইমু, সৌরভ বিকাশ বড়–য়া বিতান, মোরশেদ আলম, তসলিম আলম, কাজী দেলোয়ার হোসেন, যুব মহিলা লীগ নেত্রী সোনিয়া আজাদ, মো. ইফতু, মো. মাসুদ, মো. জাহেদ, আলী রেজা পিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. দেলোয়ার, মো. জহির উদ্দিন, জয় শংকর, মো. হাবিব, শ্রমিক নেতা তোফাজ্জল হোসেন জিকু, সামির সাকিব চৌধুরী, কামরুল হুদা পাবেল, সাব্বির সাকিব, শুভ দত্ত, ইয়াছির আরফাত রিকু প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.