রাঙামাটি অফিস
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় প্রায় দেড় মাস পর খাগড়াছড়িতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। পার্বত্য জেলাগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে কয়েক দফায় সাজেক পর্যটন কেন্দ্র এবং ৮ অক্টোবর থেকে খাগড়াছড়ি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রথম দিনেই বিপুল সংখ্যক পর্যটক জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাজেকে যান।
গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ হয়। এর পর সড়ক অবরোধ কর্মসূচির কারণে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিন সাজেকে আটকা পড়েন প্রায় দেড় হাজার পর্যটক। পরে তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রহরায় খাগড়াছড়িতে পাঠানো হয়। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। গত ১ নভেম্বর থেকে রাঙামাটিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল খাগড়াছড়ির নিষেধাজ্ঞা উঠলেও বান্দরবানের নির্দেশনা এখনও বহাল।
এদিকে গতকালই খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে জিপ, মাইক্রোবাস, সিএনজি, মাহেন্দ্রসহ ৫০-৬০ গাড়ি পর্যটক সাজেকে পৌঁছেছেন। সাজেক হিল ভিউ কটেজের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্র চাকমা বলেন, প্রথম দিনেই প্রায় ৪০০ পর্যটক এসেছেন। দীর্ঘদিন পর পর্যটকরা আসায় তাদের মধ্যেও স্বস্তি ফিরেছে।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জানান, সাজেকে ১১৬টি রিসোর্ট রয়েছে। বর্তমান ভরা মৌসুমে এখানে দিনে গড়ে ব্যবসা হয় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার। নিষেধাজ্ঞার কারণে এই পর্যটন কেন্দ্রেই প্রায় ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। খাগড়াছড়ি হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা জানান, জেলার অন্যান্য হোটেল ও রিসোর্ট মিলিয়ে ক্ষতি প্রায় ১৫ কোটি টাকার।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন, পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি সন্তোষজনক হওয়ায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরদিন থেকে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে একাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার পাশাপাশি অনেক বাড়ি, দোকান ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়।
সূত্র দৈনিক সমকাল