বাচ্ছু পাটোয়ারী,মিরসরাই(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে পর্যাপ্ত পানির অভাবে দেড় হাজার একর জমিতে বোরো ধান চাষ করতে পারছেন না কৃষকেরা। পানির ব্যবস্থা করা গেলে বোরো মৌসুমেও ধান চাষের আওতায় আসতে পারে পরিত্যক্ত থাকা এসব কৃষিজমি। গভীর নলকূপ, ছড়া ও খাল খননের মাধ্যমে বাওয়াছড়া সেচ প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহের দাবি কৃষকদের। পানি পেলে শস্য উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে আবাদি জমির পরিমাণ।উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে মোট কৃষিজমির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার একর। যার মধ্যে তিন ফসলি জমির পরিমাণ ৪২৫ একর। বোরো ধান আবাদি জমির পরিমাণ ১২০ একর। শাক-সবজি আবাদি জমির পরিমাণ ৫০০ একর। বাকি ৯৫৫ একর কৃষিজমিতে পানির অভাবে চাষাবাদে বেগ পেতে হয় কৃষকদের।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সেলিমের প্রচেষ্টায় ৩, ৫, ৬, ৭ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ২ হাজার কৃষককে নিয়ে সমিতি করা হয়। তাদের নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে একটি বাঁধ নির্মাণ ও স্লুইচ গেইট স্থাপন করে। সেখানে বর্ষা মৌসুমে পানি ধারণ করে শুষ্ক মৌসুমে কৃষিকাজের জন্য সরবরাহ করে বাওয়াছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড।
এ প্রকল্পের আওতাধীন ছড়া ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে কিছু জায়গায় সরকারিভাবে খননের মাধ্যমে ওয়াহেদপুর বিলের সাথে মাইজগাঁও গঙ্গার বিলকে সংযুক্ত করে স্লুইচ গেইট নির্মাণ করা গেলে গঙ্গার বিল ও তার পাশের কয়েকটি খালের মাধ্যমে এ পানি ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের সিংহভাগ কৃষিজমিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে। ফলে আমন, বোরো ধান, শাক-সবজিসহ কৃষিপণ্য আবাদ তিনগুণ বাড়ার সম্ভাবনা আছে।ইউনিয়নের নিজামপুর বারোমাসি ছড়া ও গাছবাড়িয়া খাল ঘুরে দেখা গেছে, অবৈধ স্থাপনা ও পলি জমে ২টি ছড়া ও খালে গতিপথ পাল্টে গেছে। বর্ষাকালে সঠিকভাবে পানি প্রবাহিত না হওয়ায় ছড়া, খাল পাড় ও আশেপাশের সড়ক ভাঙনের কবলে পড়ছে। নষ্ট হচ্ছে ক্ষেত খামার ও মাছের ঘের। অন্যদিকে দেখা গেছে গঙ্গার বিল ছড়ার অস্তিত্বই প্রায় বিলীনের পথে।
নিজামপুর ছড়া ও গাছবাড়িয়া খাল খননের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানির গতিপথ পাল্টে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে জলবদ্ধতা। বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। ক্ষতি হচ্ছে আমন ধানসহ নানা কৃষি ক্ষেতের। খাল ও ছড়া খননের মাধ্যমে একদিকে জলবদ্ধতা নিরসন হবে; অন্যদিকে কৃষিতে বাড়বে উৎপাদন। এ সমস্যা সমাধানে সরকারিভাবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন চাষিরা।