সাতকানিয়া আংশিক ও চন্দনাইশ: মাথা ব্যাথার কারণ কি এবার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম?
জনমত জরীপে চট্টগ্রাম ১৪ আসন-
সৈয়দ আককাস উদদীন
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই টান টান জনপ্রিয়তার নিরিখেই ছিনিয়ে আনতে হবে চট্টগ্রাম ১৪আসন (সাতকানিয়া আংশিক ও চন্দনাইশ উপজেলা)
আগামীর এই জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সাতকানিয়ার আংশিক অংশের জনগন ও চন্দনাইশ উপজেলার জনগনের মাঝে চলছে বিরামহীন আলোচনা।
তাদের গ্রাম্য চায়ের দোকানে ঝড় ওঠছে কখনো সাতকানিয়ার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদদীন আবার কখনো বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম রাহী অপরদিকে এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব:)অলি আহমদের ছেলে প্রফেসর ওমর ফারুকের কথা।
বেলা বিস্কুট দিয়ে লাল চা খেতে খেতে ধর্মপুরের চায়ের দোকানদার রহমত আলী বলেন,প্রফেসর ওমর ফারুক বুর্জোয়া রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান তবে জসীম উদদীন আর বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম রাহীর মতো প্রতি ঘরে ঘরে পরিচিতি নেই।
ওই দোকানদার প্রতিবেদককে বলেন- জসীম উদদীন জসিম যখন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তারও আগে এমপির জনপ্রিয়তা ছিলো যখন সে এর আগের-বার ভাইস চেয়ারম্যান ছিলো।
ওই ভাইস চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তার কারণে তাকে গত ফ্যাসিস্ট আমলে উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে মূলত সেই-সময়ে জেলে রাখা হয়।
তবে জসিমের জনপ্রিয়তার ব্যাপকতার কাছে হার মানে গত সরকারের জেলের তালা, কারাগারের ভেতরে থাকতেই সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম জসিম উদদীনকে সাতকানিয়ার মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন।
অপরদিকে রহমত আলীর সাথে তালমিলিয়ে বয়স্ক আবু বলেন-জসীম উদদীনের চেয়ে কোন অংশে আমাদের শফিকুল ইসলাম রাহীও কম না, শফিকুল ইসলাম রাহী ফ্যাসিস্ট আমলের সময়ও খাগরিয়া তথা পুরো চন্দনাইশের মানুষের পাশে ছিলো তার নিজস্ব অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও আছে।
তার মাদ্রাসায় আমার নাতিও পড়াশোনা করে রাহী খুবই মিশুক এবং ভদ্রলোক ভালো পরিবারের ছেলে -আমি তাকে ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করি।
দোকানের ডান পাশে বসে থাকা মজিদ বলেন,আমরা কর্ণেল অব: অলি আহমদের পরিবারকে ভালোবাসি কিন্তু অলি সাহেব ছাড়া তার ছেলে দাঁড়ালে মানুষের কাছে নতুন মুখ হবে।
কারণ ছেলের পরিচিত হতে আরো সময় লাগবে, নয়তো বাবার ইলেকশন পরিচালনার দায়িত্বে ছেলে ছিলো সেটা ঠিক।
তিনি আরো বলেন, তবে চেয়ারম্যান জসীম উদদীনের আলাদা একটা অবস্থান আলাদা পরিচিতি আলাদা ভালোলাগা সেটা তো সাতকানিয়া চন্দনাইশের মানুষের কাছে ব্যাপক।
আর ওদিকে শিল্পপতি আর রাজনৈতিক তৃণমূল থেকে ওঠে আসা হিসেবে শফিকুল ইসলাম রাহীও খারাপ হবেনা বিএনপি তাকে মনোনয়ন দিলে।
বলা হচ্ছিল সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানও সফল উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদদীন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ও আরাফাত রহমান স্মৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাহী এবং এলডিপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ড.কর্ণেল অব: অলি আহমদ বীর বিক্রমের ছেলে প্রফেসর ওমর ফারুক সানীর কথা।
নির্বাচনী পুরো মাঠ চেনা জানা থাকলেও বার বার চষে বেড়াচ্ছেন সাবেক জনপ্রতিনিধি এইচএম জসিম উদদীন, সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে ঘরোয়া দাওয়াত ও বিভিন্ন সামাজিক বৈঠকে সমানতালে চলছে জসিম উদদীনের পদচারণা।
দোহাজারীর রুকন নামে এক যুবক বলেন আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজচত্বর থেকে বেড়ে ওঠা এইচএম জসিম উদদীন দেখতে যেমন স্মার্ট তেমনি ভদ্রলোক সবচেয়ে বড় কথা তার সামনে আসলে যে কোন মানুষ কষ্টের কথা বলে স্বস্তিবোধ করতে পারেন, এক কথায় আমরা উপজেলা পরিষদের মতো চট্টগ্রাম ১৪আসনেও জসীম উদদীন ভাইকে চাই।
জসীম উদদীন ভাই এমপি হলে আমাদের কাছে চিরচেনা জসিম ভাই হিসেবে থাকবেন,এমপি হিসেবে নয়।
আর সাধারণ খেটেখাওয়া জনগনের ফিলিংসটা কি-রকম তা জসিম উদদীন ভাইয়ের চেয়ে বেশী কেউ বুঝে বলে মনে হয়না।
এদিকে বিএনপির রাজনীতির তৃণমূল থেকে তিলে তিলে ওঠে আসা শফিকুল ইসলাম রাহী সাবেক স্বৈরাচারের আমলে মামলা হামলার শিকার হয়েও স্থানীয় বিএনপির পাশে থাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকেই দলীয় মনোনয়নে প্রার্থী পেতে চায়।
সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় বিএনপি চট্টগ্রাম ১৪আসনের পাশাপাশি (চট্টগ্রাম ১৫) আসনও এখন পর্যন্ত তাদের দলীয় প্রার্থীতার নাম ঘোষনা করেননি।তাই অন্যরা এটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে মাঠের পোড় খাওয়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম নিজের মতো করে ঘুচিয়ে নিচ্ছেন এবং তিনি ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন।
এদিকে, দোহাজারীর সরোয়ার বলেন,দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক, সাংগঠনিক এবং উন্নয়নমূলক কাজের অভিজ্ঞতার কারণে অন্যদের তুলনায় এমপি প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে আছেন সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এইচ এম জসিম উদ্দীন জসিম।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মাঠ পর্যায়ে এইচ এম জসিম উদ্দীনের তৃণমূলভিত্তিক শক্ত শিকড় তুমুল জনপ্রিয়তা আসন্ন নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখবে। অতীতে তাঁর নেতৃত্বে এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বেকার যুবকদের চাকুরী প্রদানসহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, সড়ক, বিদ্যুৎ ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দৃশ্যমান অগ্রগতি ঘটেছে বলেও তারা মন্তব্য করেছেন। সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের রফিক আহমদ বলেন, জসিম উদ্দিন সবসময় মানুষের পাশে থাকেন।
দুর্যোগে বা সমস্যায় তাঁকে পাশে পাওয়া যায়। আগের জনপ্রতিনিধিরা শুধু ভোটের সময় এলাকায় আসতেন। কিন্তু জসিম উদ্দিন নিয়মিত খোঁজখবর নেন। তাই এবার আমরা তাকেই ভোট দিতে চাই।
তবে চন্দনাইশের বিভিন্ন জায়গায় এখনো বিএনপির আরেক নেতা এডভোকেট মিজানুর রহমান সাহেবের কট্টর সমর্থকদেরও খোঁজ পায় প্রতিবেদক।
প্রতিবেদক নির্বাচনী তথ্যের সন্ধানে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে গেলে বেশ কিছু লোক অন্যান্য প্রার্থীদের ছাপিয়ে এডভোকেট মিজানুর রহমানেরও কথা বলেন।
আর/আর