ইউএনওর গোপন সম্মতিতে ২৫ লাখ টাকার খনিজ বালু বিক্রি!

কোনোরকম সরকারি নিলাম মূল্য আয়কর-ভ্যাট ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায় ২৫ লাখ টাকার খনিজ বালু বিক্রিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গোপন সম্মতি থাকার অভিযোগ উঠেছে। কয়েক দফায় মজুদকৃত প্রায় ২৫ লাখ টাকার লক্ষাধিক ঘনফুট খনিজ বালু উপজেলার পাটলাই নদীর তীর থেকে ইউএনও পদ্মাসন সিংহের সম্মতিতে একটি চক্র বিক্রি করছে। এ নিয়ে এলাকার লোকজন বারবার আপত্তি জানানোর পর জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্রের অজুহাত দেখিয়ে বালু বিক্রেতাদের বালু বিক্রিতে নীরবে সাঁয় দিয়ে যাচ্ছেন ইউএনও।  খবর- সকালের সময়ের।

বিসিএস ৩৩তম ব্যাচের এ কর্মকর্তা বিগত ২০২০ সালের ১৮ জুন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করার পরপরই সীমান্তের পাহাড়ি ছড়া, মাহারাম শান্তিপুর নদী হতে অবৈধভাবে উক্তোলকৃত বালু পাথর জব্দ করার পর নিলামকাণ্ডে ও নিলাম ভণ্ডুলের পর গোপন সমঝোতায় বালু-পাথর বিক্রিতে সাঁয় দেয়ায় তাকে নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

সম্প্রতি উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের পাটলাই নদীর তীরে জামালপুর, নবাবপুর ও ভুড়াঘাট গ্রামে অন্যদের মজুদকৃত  প্রায় ২৫ লাখ টাকা মুল্যের লক্ষাধিক ঘনফুট খনিজ বালুর মালিকানা দাবি করেন তাহিরপুরের ধীমান চন্দ নামক এক যুবক। এরপর জেলা প্রশাসক বরাবর বালু সরিয়ে নিতে আবেদন করলে বিষয়টি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ইউএনওর নিকট প্রেরণ করা হয়। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ২০ হাজার ঘনফুট বালু  মজুদ রয়েছে বলে ভুল তথ্যের আলোকে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন ইউএনও। এরপর জেলা প্রশাসন বালু সরিয়ে নিতে কোনো ক্ষমতাপত্র বা লিখিত নির্দেশনা না দিলেও  ইউএনওর নীরব সম্মতিতে দুটি স্টিল বডি ট্রলারে করে  প্রায় ১৪ হতে ১৫ হাজার ঘনফুট বালু সরিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন চলতি সপ্তাহে।

ধীমান চন্দ জেলা প্রশাসন হতে মজুদকৃত জব্দবিহীন বালু নিলাম বা ডাক পেয়েছে বলে প্রচার করে বুধবার দিনভর আরো দুটি স্টিল বডি ট্রলারে বালু লোড করতে থাকেন। বুধবার দিনে-রাতে দু‍ই দফায় এ বিষয়ে ধীমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন বালু নেয়ার অনুমতিপত্র রয়েছে, ইউএনও স্যার অনুমতি দিয়েছেন। পরবর্তীতে বলেন, কেউ অনুমতি দেননি, আগে এক নৌকায় (ট্রলারে) ৭ হাজার ঘনফুট বালু নিয়েছি, বুধবার আরো দুটি স্টিল বডি ট্রলারে বালু লোড করা হচ্ছে। এরপর তার নিকট বালু নেয়ার অনুমতিপত্র দেখাতে বললেও দিনভর সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন।

বুধবার রাতে তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদারের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকদিন পুর্বে ইউএনও স্যার আমাকে ফোন করে বলেছিলেন জেলা প্রশাসনের একটি কাগজ ধীমান থানায় দিয়ে যাবে বিষয়টি দেখার জন্য।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহর নিকট বালু বিক্রির অনুমতি প্রদান, বালু মজুদ, মালিকানা দাবির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো অনুমতি দেইনি।

বুধবার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ প্রতিবেদকে বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে বালু নেয়া বা বিক্রির কোনো অনুমতি কাউকে দেয়া হয়নি। এসব যে বলছে তাকে কাগজপত্র দেখাতে বলুন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.