দীর্ঘ ২০ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন। দুই দফা স্থগিত হওয়ার পর অবশেষে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
ধার্য করা হয়েছে সম্মেলনের দিন-ক্ষণও। ১৯ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই ভার্চুয়াল সম্মেলন। সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর কমিটি গঠন করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু গত ২০ বছরেও সম্মেলন না হওয়ায় এ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন অনেকে। তবে এবার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণায় উজ্জীবিত হয়েছেন নেতা-কর্মীরা।
জানা গেছে, ১৯ জুন নগরের লালখান বাজার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হবেন। তবে সম্মেলনে দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে পরদিন কমিটির নাম ঘোষণা করা হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেন, ‘২০১৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা মেয়াদোত্তীর্ণ থানা, জেলা ও মহানগর কমিটিগুলোতে সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু, করোনার কারণে সম্মেলন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তাই সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সম্মেলন পুনরায় শুরু করার উদোগ নিয়েছি। ১৯ জুন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভার্চুয়াল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে থানা, জেলা ও মহানগর কমিটিগুলোতে সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্মেলনের পরদিন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হবে। ’
নেতা-কর্মীরা বলছেন, নগর স্বেচ্ছাবেসক লীগ দু্ই ধারায় বিভক্ত। তাদের কোন অনুসারীকে কোন পদ দিবেন, কমিটির দায়িত্ব কাকে দেবেন, কাকে বাদ দেবেন- সেই চিন্তায় থানা ও ওয়ার্ড কমিটি দিতে পারেনি আহ্বায়ক কমিটি। একই কারণে দীর্ঘদিন সম্মেলনও হয়নি। আসন্ন সম্মেলনে দুই পক্ষ থেকে কমপক্ষে ১০ জন অনুসারী আলোচনায় রয়েছেন। এদের মধ্য থেকে নতুন নেতৃত্ব আসবে বলে তাদের ধারণা।
আলোচনায় রয়েছেন যারা
আলোচনায় থাকা নেতারা হলেন- দেবাশীষ নাথ দেবু, ইসলামিয়া কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিজুর রহমান আজিজ, মো. জসিম উদ্দিন, মনোয়ার জাহান মনি, লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল, হেলাল উদ্দিন, সুজিত দাশ, আনোয়ারুল ইসলাম বাপ্পী, মিনহাজুল আবেদীন সায়েম, আব্দুর রশিদ লোকমান, অ্যাডভোকেট তসলিম উদ্দিন, আজাদ খান অভি ও শাহেদ আলী রানা।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘যারা দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিল তাদের কমিটিতে স্থান হোক- সেটাই আমরা চাই। আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর তৃণমূলের কমিটিগুলো গঠন করেছি। নগর কমিটির সম্মেলন করার চেষ্টা করলেও বিভিন্ন কারণে তা হয়নি। ১৯ জুন ভার্চুয়াল সম্মেলন আয়োজনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। আমরা চাই সবাইকে নিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসুক। ’
২০০১ সালের জুলাই মাসে ২১ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে গত ২০ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি সেই আহ্বায়ক কমিটির নেতারা। এমনকি ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়েও কোনও কমিটি ঘোষণা করতে পারেননি তারা। যে কারণে এতদিন স্থবির হয়ে পড়েছিল নগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের কার্যক্রম। তবে এখন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আবার সবাই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। নতুন কমিটিতে স্থান পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। ধরনা দিচ্ছেন শীর্ষ নেতাদের কাছে।