‘কোভিড হিরো’ সম্মাননা পাচ্ছেন ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া

‘কোভিড হিরো’ সম্মাননার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ও ২০২০ সালে করোনা ক্রান্তিকালে গড়ে ওঠা বেসরকারি উদ্যোগে দেশের প্রথম চট্টগ্রাম ফিল্ড হসপিটালের প্রধান উদ্যোক্তা ও নির্বাহী জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।

রোটারি ইন্টারন্যাশনাল সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুন এ পুরস্কারের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করা হয়।

অধ্যাপক মাহতাব মহামারির সময় বিপন্নদের খাবার, হ্যান্ড সেনিটাইজারসহ ১৬টি কার্যক্রম চালু করেন। লকডাউনের সময় তিনি ২৪ জন চিকিৎসককে নিয়ে একটি টিম গঠন করেন, যারা প্রতিদিন ৩০০ রোগীকে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করেন। করোনা নিয়ে প্রায় ১৭টি গবেষণা পত্র দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। লিভার রোগীদের ভ্যাকসিন নীতিমালা প্রস্তুত করতে তিনি ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন মিডিয়াতে টক-শো ও লেখালেখি করেন।
এর আগে ওয়ালটন গ্রুপ হেলথ কেয়ার হিরোজ-২০২০, গ্লোবাল বিজনেস সিএসআর অ্যাওয়ার্ড-২০২১ ও ওয়ানকা গ্লোবাল হেলথ কেয়ার লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২১ অর্জন করেন অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব।

তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৯৫ সালে এমবিবিএস, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৮ সালে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে এমএসসি এবং ২০০৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হেপাটোলজিতে এমডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি আমেরিকান কলেজ অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি, ইন্ডিয়ান কলেজ অব ফিজিসিয়ানস, রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অব আয়ারল্যান্ড এবং রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অব লন্ডনের ফেলো।

২০২০ সালে করোনাকালে গড়ে ওঠা দেশের প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল ‘চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল’ ২১ এপ্রিল করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু করে। চট্টগ্রাম শহরে নাভানা গ্রুপের পরিত্যক্ত গ্যারেজকে ১৪ দিনের মধ্যে সাজিয়ে গুছিয়ে কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য তৈরি করেন ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায়কে সম্বল করে সাধারণ জনগণকে সম্পৃক্ত করে ১৬ হাজার বর্গফুটের হাসপাতাল মানবিক ভলান্টিয়ারদের সহযোগিতায় ১৪০ দিন রোগীদের বিনামূল্যে সেবা প্রদান করে। বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্বে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কাজের কথা সমাদৃত। ১৪০ দিন টানা চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের রোগীদের সাথে ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া ও তাঁর ভলান্টিয়াররা আবাসিকভাবে অবস্থান করে নজির সৃষ্টি করেন। প্রায় ১৬০০ এর অধিক রোগীকে সেবা প্রদান করেন তারা। অনেকে ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়াকে করোনাকালে প্রথম সাহস হিসাবে উল্লেখ করেন।

ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া এই অবদানের জন্য ইতিমধ্যে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ‘চিকিৎসক রত্ন’, ওয়ালটন গ্রুপের ‘হেলথ হিরো’, ধ্রুবতারা ফাউন্ডেশনের ‘আইডিয়েল ডক্টর অ্যাওয়ার্ড’ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেছেন।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে সুইডেনের বিখ্যাত কারোলিন্সকা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমডি ও এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এবং অক্সফাম বাংলাদেশের কোবিড-১৯ কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.