বাঁশখালী প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের বাঁশখালী গন্ডামারায় বর্গা চাষীর বিরুদ্ধে হাফেজ রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে খোদ জমির মালিককে ধরে নিয়ে মারধর ও নির্যাতনের মাধ্যমে জোরপূর্বক জমি লিখে নেয়ার অপচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশী সহায়তায় জীবন রক্ষা পায় হাফেজ রফিকের। এনিয়ে গত (২১ জুন) সোমবার বিকেলে পৌর শহরের সাফরান রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হাফেজ রফিক।
জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের মৃত ছাবের আহমদের পুত্র হাফেজ রফিকুল ইসলাম তার মালিকানাধীন প্রায় ৩ কানি জায়গা একই এলাকার আশরাফ আলীর পুত্র মনির আহমদকে বর্গা লাগান। দীর্ঘ দিন ধরে রফিকের জমিতে চাষাবাদ করার পর ওই জায়গার প্রতি কুদৃষ্টি পড়ে মনির আহমদ ও তার সহযোগীদের। এক পর্যায়ে ২০০৫ সাল থেকে জায়গাটি আত্মসাৎ করতে অপকৌশলে লিপ্ত হয়। এনিয়ে হাফেজ রফিক আইনের আশ্রয় গ্রহণ করে। এদিকে ওই জায়গা আত্মসাৎ করতে ব্যর্থ হয়ে গত ১১ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় বাঁশখালীর পশ্চিম গন্ডামারা আল কোরঅান মডেল কেজি স্কুল এলাকা থেকে বর্গাচাষী মনির আহমদের নেতৃত্বে ১০/১২ জন ব্যক্তি জমির মালিক হাফেজ রফিকুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর ও নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তারা জমি লিখে দিতে চাপ সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে হাফেজ রফিকের আত্মীয় স্বজন ৯৯৯ এ ফোন করে সহায়তা চাইলে পুলিশ ওই দিন রাত ৯ টার দিকে গন্ডামারা সিরাজ মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। দীর্ঘ ১ সপ্তাহ চমেকে চিকিৎসা শেষে গত ১৬ জুন হাফেজ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বাঁশখালী আদালতে গন্ডামারা এলাকার আশরাফ আলীর পুত্র মনির আহমদ ও আহমদুর রহমানের পুত্র সিরাজ মিয়াসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, হাফেজ রফিকুল ইসলাম গন্ডামারা আল কোরআন মডেল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তাকে প্রতিপক্ষের লোকজন ধরে নিয়ে মারধর ও নির্যাতনের পর তার কাছে থাকা ৬০ হাজার টাকা এবং একটি দামী মোবাইল সেটও নিয়ে যায়। পরে আত্মীয় স্বজনরা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলে রাত ৯ টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। হাফেজ রফিক জানান, সেদিন পুলিশ এগিয়ে না এলে আমার জীবন বিপন্ন হত। পুলিশী হস্তক্ষেপে সেদিন আমি জীবনে রক্ষা পেয়েছি। বাঁশখালী থানার ওসি সফিউল কবীর জানান, গন্ডামারার হাফেজ রফিককে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছি। আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি সফিউর। জমি বর্গা নিয়ে মালিককে অপহরণ করে জমি লিখে নেয়ার অপচেষ্টার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।