বৈরাগ হবে চট্টগ্রামের মডেল ইউনিয়ন: সোলায়মান

আনোয়ারা প্রতিনিধি 

দেশের প্রথম নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে রাষ্ট্রের মহা পরিকল্পনা আর নতুন-নতুন গড়ে উঠা শিল্প কারখানায় লাখো মানুষের স্বপ্নের নগরীতে পরিণত চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নকে আধুনিক মডেল ইউনিয়নে রূপ দিতে চায় বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান।

গতকাল শুক্রবার সকালে দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ পত্রিকার এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে দরকার সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া। বেকারত্ব দূর করতে যা প্রয়োজন আমার ইউনিয়নে তাও রয়েছে। গড়ে উঠেছে শিল্প নগরীতে। আগামীতে আবারো সুযোগ পেলে আমার ইউনিয়নের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে বেকারত্বের অভিশাপ দূর হবে নতুন প্রজন্মদের। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে ও পরে বৈরাগ ইউনিয়নের ২৫ শ লোককে কেইপিজেডে চাকরীর ব্যবস্থা করেছি। নতুন ভাবে চাকরী নিশ্চিত করণ ও শিক্ষার হার বৃদ্ধি করণে ইউনিয়নে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দিরের উন্নয়ন মূলক কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিয়ে আমার রাজনৈতিক অভিভাবক মাননীয় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি মহোদয়ের প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামে বৈরাগ ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর হবে।

সহজ-সরল সাদা মনের মানুষ ও বিমান সোলায়মান হিসেবে ইউনিয়নবাসীর কাছে বেশ পরিচিত। মোহাম্মদ সোলাইমান ১৯৫১ সালে বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম আশু মিয়া। ১৯৭০ সালে তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি বাঙ্গালী হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তিতে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফার ইস্ট পাকিস্তান কোটায় বাংলাদেশ বিমানে চাকুরী নেন। একই সাথে তৎকালীন পিআই কর্তৃক বিশেষ ডিপ্লোমা কোর্স শেষ করেন। ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারী বিমান বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তির বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জাতীয় নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের সাথে মোহাম্মদ সোলায়মান গণ ভবনে অংশ নেন। বিমানে চাকুরী চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও তিনি বিমান শ্রমিক ইউনিয়নে সিবিএ’র একাধিকবার সাংগঠনিক সম্পাদক, বিভাগীয় যুগ্ম সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। এছাড়া তিনি মানবাধিকার সংগঠন, সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সাল থেকে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত বিশ্বের ১৪৭টি দেশ নিয়ে গঠিত ওয়ার্ল্ড ট্রান্সপোর্ট ফেডারেশনের সদস্য ছিলেন। ২০১৬ সালে মোহাম্মদ সোলায়মান স্ব-তন্ত্র প্রতীক নিয়ে বৈরাগ ইউনিয়নের জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ছাত্র জীবন থেকে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে বড় হন। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতির পাশাপাশি মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থেকে নিজেকে একজন জনবান্ধব নেতা হিসাবে গড়ে তুলেছেন।

মোহাম্মদ সোলায়মান প্রতিবেদককে আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমার রাজনৈতিক অভিভাবক মাননীয় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি মহোদয়ের সহযোগিতায় শিল্প নগরীর বৈরাগের রাস্তাঘাট, স্কুল, মাদ্রাসা ও অন্যান্য অবকাঠামো গুলোর চলমান উন্নয়নের পাশাপাশি আমার বৈরাগ ইউনিয়নকে আধুনিক মডেল ইউনিয়নে রূপ দিতে চেষ্ঠা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। আগামী নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকে দল থেকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমার রাজনৈতিক অভিভাবক মাননীয় ভূমিমন্ত্রী আমাকে মনোনীত করবেন এটায় শতভাগ আশাবাদী। যদি বৈরাগবাসীর সেবা করার আবারো সুযোগ পাই তাহলে ‘আগামী ৫ বছরের জন্য নতুন কিছু পরিকল্পনা হাতে নেব’। সে গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- প্রতিটি গ্রামের বাড়ি-বাড়ি সংযোগ সড়ক (বাড়িঘাটা) আরসিসি ঢালাই’ পাকা রাস্তা, প্রতিটি বাড়িতে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থার জন্য টিউবওয়েল স্থাপন, গ্রামের মানুষের রাতে নির্বিঘ্নে চলাচলের সুবিধার্থে শতভাগ রাস্তায় স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান হাট বাজারে অপরাধ দমনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, গ্রামে দ্রুতগতির ওয়াই-ফাই ইন্টারনেটের ব্যবস্থা, কর্মসংস্থানের লক্ষে বেকারদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করাসহ আমার ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রূপ দিতে চেষ্ঠা করব ইনশাল্লাহ্।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.