বাঁশখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবস্থান নেওয়া প্রতিবন্ধীর বসতভিটা উচ্ছেদের চেষ্টা!

বাঁশখালী প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন জলকদর খালের কোল ঘেষে গড়ে উঠা (ওয়াফদার রোড়) দুই পাশেই চরের অসংখ্য সরকারি খাস জায়গা দখল করে স্থাপনা ও মৎস্য ঘের নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই এলাকায় ভূমিদস্যুদের একের পর এক খাস দখল করে স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক লেগেছে। তাছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ভবনে বসবাসকারী এক প্রতিবন্ধীর পরিবারকে উচ্ছেদেরও পায়তারা শুরু করেছে ভূমিদস্যুরা। এ ঘটনায় বাঁশখালী যুগ্ম ও দায়রা জজ আদালত, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বাঁশখালী থানায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করা হলেও প্রশাসনের নির্দেশ মানছেনা ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এদিকে সরকারি খাস জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সকালে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির মিয়াজী বাজার হতে রত্নপুর গ্রাম পর্যন্ত জলকদর খালের বেড়িবাঁধের উভয় পার্শ্বে গড়ে উঠা চরের সরকারি খাস জায়গা দখল করে দোকানঘর, টিনের ঝুপড়ি ঘর, মৎস্য ঘের ও বসতঘর নির্মাণ করে ও মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় হাবিবুর রহমান প্রকাশ কনু মিয়ার পুত্র আবু ছৈয়দ গংরা। ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের কবল হতে রক্ষাও পাচ্ছে না শারীরিক প্রতিবন্ধী জালাল উদ্দিনের বসতভিটা। ওই প্রতিবন্ধীকে উচ্ছেদের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যাক্ত ভবনের আশেপাশের জায়গা গুলো দখলে নিচ্ছে তারা। সম্প্রতি ওই প্রতিবন্ধীর বসতঘরের পার্শ্ববর্তী পুকুরে জোরপূর্বক মাটিও ফেলে ভরাট কার্যক্রম শুরু করেছে। এ সময় স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বাহারছড়া রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর আবু ছৈয়দ গংরা বিক্রির উদ্দেশ্যে ইট, কংক্রিট স্তুপ করে রেখেছে। ওই স্থানে ইট ভাঙার মেশিন বসানোর ফলে শব্দ দূষণ হয়ে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা।

অসহায় ছৈয়দুল আলম বলেন,আমার
বসতঘরের সামনের খাস জায়গা ভূমিদস্যুরা দখলে নিয়ে টিনের ঝুপড়ি ঘর তৈরী ওই পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। পরে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানালে ছোট একটি গলি করে দেয় তাদের আসার যাওয়ার জন্য। ওই পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ভূমিদস্যুরা যে গলিটি তাদের আসা যাওয়ার জন্য রেখেছে সেই গলি দিয়ে একজন মৃত ব্যক্তির লাশও বের করা সম্ভব হবে না। সব মিলিয়ে ভূমিদস্যুদের দৌরাত্মে এক প্রকার অসহায় ভাবে দিনযাপন করছে এই এলাকার সাধারণ জনগণ।

প্রতিবন্ধী মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট হতে পুনর্বাসনে আশ্বস্থ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ভবনে আমি ও পরিবার কোন রকমে দিন যাপন করছি। ভূমিদস্যুরা এলাকার বিপুল পরিমাণ খাস জায়গা দখলে নিয়েছে। তারা আমার বসতঘরও দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’

এ ব্যাপারে জলকদর খালের খাসজমি দখলকারী আবু ছৈয়দ বলেন,আমি আর এস মূলে মালিক তাই মাথা খীলা খাস জমি আমি দখল করেছি।

এ বিষয়ে জানতে বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের ও সরকারি খাস জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি। প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। খাস দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.