সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নে মাদকের জেরে গত লকডাউনে গেছে দুটি প্রান!এবার যেতে পারে আরো বেশী

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মাদক সংক্রান্ত,নারীঘটিত,সামাজিক আধিপত্যের জেরে একের পর এক ঝামেলা লেগে থাকা একটি ইউনিয়ন সাতকানিয়া সদর।
মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আহত নিহতের সংখ্যাও নেহায়েত কম না।

তবে এবারের মুখোমুখি পাল্টা পাল্টি সংঘর্ষ আবারো সেই নারীঘটিত ও আধিপত্য বিস্তারের কারনে।

গেল বৃহস্পতিবার(২২শে এপ্রিল)রাত ৮টায় সদর ইউনিয়নিয়নের গারাঙ্গিয়া মজিদিয়া ব্রীজের পশ্চিমের হেলালের ভাগিনাকে কুপিয়ে আহত করে গারাঙ্গিয়া মজিদিয়া ব্রীজের খালের পূর্বের নবী হোসেনের ছেলে আমিন ও আবুল কালামের ছেলে আলমগীর। এবং তাদের বাহিনীর হাতে –
আরো বেশকয়েকজন আহত ও হয়েছে।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান,মাদক ও নারীঘটিত রেষ লেগেই আছে হেলাল গ্রুপ আর গারাঙ্গিয়ার ডেপুটি হাট এলাকার আমিন, আলমগীর বাহিনীর মাঝে তারই রেষ ধরে গত পরসু এশার নামাজের সময় মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিটি গারাঙ্গিয়ার হেলালের ভাগিনা মোঃসাজ্জাদ ও অপর একজন।

হেলালদের অভিযোগ আমিন আলমগীররা ডলুনদীর মাটি ও ভরাট বালি থেকে কমিশন খেয়ে আসছিলো,ফলে স্থানীয়দের বাড়িঘর বিলীন হওয়ার সুক্ষ ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করে যাচ্ছিলো,এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে পুলিশ প্রশানের সহযোগিতায় তাদেরকে এই ষড়যন্ত্র থেকে ফিরিয়ে আনলে তারা হেলাল ও এলাকাবাসীর প্রতি ক্ষোভে তার ভাগিনা সাজ্জাদকে গারাঙ্গিয়ার ডেপুটি হাটে বাদশার দোকানের পাশে ব্যাপক মারধর চালায় এবং মসজিদের মাইকে ডাক দিয়ে লোকজন জড়ো করে  হেলালদের বাড়িসহ হেলালদের এলাকায় হামলা চালায় ৩শতাধিক লোক।

সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার (২৩শে এপ্রিল)দুপুর ২.৩০মিনিটে ডলু নদীর পূর্বপাড়ে আবারো শতাধিক মানুষ জমিয়ে হেলালদের এলাকা লক্ষ করে গুলি ছুঁড়ে বেশ কয়েক রাউন্ড।

স্থানীয়রা জানান,এদের পক্ষে তিন শতাধিক আর হেলাদের পক্ষেও পুরো সমাজ এলাকা ভিত্তিক গন্ডগোল হলে দোষী নির্দোষী সবমিলিয়ে বহু হতাহত হবে।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত আমিন বলেন,আমার এলাকার মোঃহাসেম নামে এক ব্যক্তিকে হেলাল গ্রুপ কিডন্যাপ করে নিয়ে যাবার সময়, সমাজের লোকেরা মসজিদে মাইক দিয়ে ডেকে হেলালদের ধাওয়া করে আর পরবর্তীতে আমরা পশ্চিমকূলে গিয়ে হেলালদের বাড়িতে গিয়ে যে হামলা করেছি বলেছেন তা আমরা করিনি, হেলালদের তা সাজানো।

আর হেলাল থানায় অভিযোগ দিলে আমরা থানায় যায় এবং থানা থেকে আসার পথেও আমাদের উপর হামলা করেন।

তবে সরেজমিনে গেলে  হেলালদের বাড়ির দরজা আর জানালার কাঁচ ভাঙ্গা দেখা গেছে।

আরেক অভিযুক্ত আমিনের সহযোগী  আলমগীরকে কল করা হলে তিনি বিরক্তবোধ করেন,এবং বলেন আমি হেলালের ব্যবসায়ীক পার্টনার ও একজন রাজমিস্ত্রী আর হেলাল কি ব্যবসা করেন তার উত্তর খোঁজলে তিনি বলেন সে গুটি বেয়ারী।

তখন আবার প্রশ্ন করা হয় আপনি কি গুটি ব্যবসার পার্টনার কিনা তখন তিনি বলেন, আমি হেলালের গরু ব্যবসার পার্টনার।

এদিকে আহত সাজ্জাদের মামা হেলাল গনমাধ্যমকে বলেন,মূলত ডলুনদীর বালু আর ভরাট মাটি উত্তোলনে বাধা দিলেই আমি এবং আমার বাড়ি এই হামলার স্বীকার হয়েছে।

হেলাল আরো বলেন,আমি আমিন ও আলমগীর সহ মোট সাত(৭জন)এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিছি এলাকাবাসীর পরামর্শে, এখন পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করে যে ব্যবস্থা করে সেটা।

এদিকে মজিদিয়া ব্রীজের পাশের স্থানীয়রা  জানান,আমিন আর আলমগীরদের পুনরায় ধাওয়া করার লক্ষে হেলালদের সমাজের পাচ শতাধিক লোক গতকাল জোহরের নামাজ শেষ করে গ্রাম্য বৈঠকও করেন।

এদিকে সাতকানিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন,দুই পক্ষই উত্তেজিত ঠিক তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত,প্রকৃত ঘটনার রহস্যপূর্বক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্যঃএই সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নে গতবছরের লকডাউনে মাদকের জেরে মোসাদ্দেক ও সোহেল দুজনই খুন হন,পরবর্তীতে আরেকজন মুমূর্ষ অবস্থায় ছুরিকাঘাত হয়ে এখনো মৃত্যুর পথে।

সমাজের সচেতন জনগন জানান,এই ইউনিয়নে জবর দখল,ডলুনদীর ভাগভাটোয়ার,মাদক,ও ভূমিধস্যুতার ব্যাপক সমস্যা যার ফলে যে কোন মুহুর্তে তাদের শেল্টারে একটি কিশোর গ্যাং তৈরী হয়ে এলাকাকে হুমকীর মুখে ফেলে দেয়,তবে এবারের ঘটনাটা ভিন্ন যেখানে এলাকাবাসী এলাকাবাসী মুখোমুখি অবস্থানে এটা আরো ভয়াবহ হবে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.