সাতকানিয়া পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মকর্তার কিরিচের কোপে নিহত এক দিনমজুর

পুকুর লাগিয়ত ও সীমানা প্রাচীরের প্রতিবাদের বলি- নিহত কবির

নিজস্ব প্রতিবেদক 
আশংকা প্রকাশ করে সাতকানিয়া  থানায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিপক্ষের আঘাত থেকে রেহায় পেলনা টমটম চালক, প্রতিপক্ষের দা এর আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৮ঘন্টা পর  মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন  রিক্সা চালক নুরুল কবির
শনিবার বিকালে উপজেলার এওচিয়ার ৪নং ওয়ার্ডের ছড়ারকুল সুয়ার বাপের বাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় ১জন নিহত  নিহত নুরুল কবির একই এলাকার মৃত আমির আলীর ছেলে এবং আহতরা হলেন  তার ভাই জানে আলম(৩০),মো: আলম(২৫)ও মো:আবছার(৩৫) ও আমির আলীর স্ত্রী মমতাজ বেগম(৫৫)।
জানা যায়, ছড়ারকুল সুয়ার বাপের বাড়ির  আব্দুল মজিদের ছেলে সাতকানিয়া উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ফিল্ড অফিসার  শহিদুল ইসলাম (৩৫) নজির আহমদ(৪৫)ও নেয়াজুর রহমান এবং আব্দুস সোবানসহ মিলে  ভুক্তভোগী নুরুল কবিরদের বাড়িভিটার পাশে একটা বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করতে চাইলে নুরুল কবিরদের ব্যবহৃত টয়লেট উচ্ছেদ করে ওয়াল নির্মাণের চেষ্টা চালায় অভিযুক্ত আব্দুল মজিদ ও তার ছেলেরা।সেদিনও উভয় পক্ষে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছিল।
এই ঘটনায় তখন নিহত  নুরুল কবির আশংকা প্রকাশ করে ৩১শে আগস্ট সাতকানিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছিলেন।
এদিকে ৬ই সেপ্টেম্বর  শনিবার বিকালে একই বাউন্ডারি ওয়াল পুনরায় নির্মাণ করার সময় রিক্সাচালক   নুরুল কবিরদের চলাচলের পথ বন্ধ করে দিতে চাইলে উভয় পক্ষে আবারো গন্ডগোল শুরু হয়।
আব্দুল মজিদ ও তার ছেলেদের দা এর ধারালো কোপে মাথায় শরীরে আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নুরুল কবির, তাকে বাঁচাতে মা ও ভাই বোনেরা গেলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করূ হয় বলে নিশ্চিত করেছেন আহতের জেঠাত ভাই মো:হারুন।
স্থানীয়রা উদ্ধার করে আহতদের সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নুরুল কবিরকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
 নিহতের  মা মমতাজ বেগম বলেন,৩১শে আগস্ট আমাদের টয়লেট ও রাস্তা বন্ধ করে আব্দুল  মজিদ ও তার ছেলেরা নির্মাণ কাজ করতে গেলে আমরা অসহায় হয়ে পুলিশের আশ্রয় নিই,তখন আব্দুল মজিদ ও তার ছেলে শহিদ ২/৩শত ছেলেপেলে আনলে আমরা ভয়ে চুপ থাকি তখন অবশ্যই  পুলিশ ও ছিল।
কিন্তু শনিবার  আবারও আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করতে চাইলে আমরা বাঁধা দিলে আমাদের উপর এই ঘটনা ঘটায়।
তিনি আরো বলেন নেয়াজুর হাতে কাঁচির মত একটা দা ছিলো ওটা দিয়েই মূলত আমার ছেলের মাথায় আঘাত করেন,এবং শহিদুল ইসলাম খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছিদ্র করে দেয়।
আব্দুল মজিদ বাটাম দিয়ে আমার আরেক ছেলে জানে আলম ও মো: আলমকে বেদড়ক পিটায়, আমরা বাঁচাতে গেলে আমাদেরও পিটিয়ে আহত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরুল কবির  পেশায় দিনমজুর ও রিক্সাচালক তার দুটি অবিবাহিত মেয়ে ও একটি ছেলে অপরদিকে আব্দুল মজিদ  ছেলেপেলেদের টাকার জোর এবং শিবিরের সাবেক নেতা হওয়ায় এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছে গত ৫ই আগস্ট থেকে।
ঘটনার বিষয়ে সাতকানিয়া থানার ওসি বলেন-আমি ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকবার পুলিশ পাঠিয়েছি।
হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে-ইতিমধ্যে আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
নিহতের জেঠাত ভাই মো:হারুন বলেন মূলত ২০২৪সালের ৫ই আগস্ট থেকে শিবির নেতা শহিদ ও ইউনিয়ন  আওয়ামী লীগনেতা  আব্দুস ছোবান  আমাদের মৌরশী পুকুর অবৈধ ভাবে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে পার্শ্ববর্তী এক ব্যক্তিকে লাগিয়ত দিতে চাইলে তখন থেকে ঝগড়াঝাঁটির সূত্রপাত।
পরে পুকুর লাগিয়তের  রেষারেষি থেকে আমাদের চলাচলের রাস্তা ও আমাদের ভিটেমাটি উচ্ছেদ করতে চায় তারা।
হারুন আরো বলেন-সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের অপর  ৯৪৩/২০২১মামলার বাদী আব্দুল মজিদ তবে আদালত উল্টো মজিদকে নিষেধাজ্ঞার শোকজ করাতেও তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
হারুন আরো বলেন,আমি নিজেও জামাত সমর্থক এটা পুরো এওচিয়ায় জানে এবং আমি নিয়মিত বায়তুল মালও দিই নিহত কবিরও বায়তুল মাল দিত কিন্তু আমরা গরীব মানুষের ভিটেমাটি দখল করার জন্য সাবেক শিবির নেতা শহিদ একটি গ্রুপ নিয়ে গত ১০দিন ধরে এলাকায় প্রতিদিন বহিরাগত লোক এনে আজকের মত ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিকে মামলার বাদী নাজিম উদদীন বলেন,আমার ভাই নুরুল কবির নিহত হয়েছে সরাসরি শহিদুল ইসলামের দা’ এবং নেয়াজু রহমানের খুন্তির আঘাতে।
শহিদুল ইসলাম সাতকানিয়া উপজেলায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ফিল্ড অফিসার হওয়াতে আমাদের ইউএনও টিএনও এর ভয় দেখায়।
শহিদুল ইসলাম এওচিয়া শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহসভাপতি ও এওচিয়া ৪নং ওয়ার্ডের বায়তুল মাল উত্তোলনের দায়িত্বশীল। তার লেখাপড়া চট্টগ্রাম মহসিন কলেজ।
সাবেক এমপি নদভীর পিএস এরফানুল হক চৌধুরী যখন সাতকানিয়া  উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান ছিলেন তখন ওনাকে বিপুল অংকের টাকা দিয়ে পিতা আব্দুল মজিদকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে পুলিশ ভেরিফাই ছাড়া চাকুরী ভাগিয়ে নেয়।
এদিকে হত্যা মামলার বাদী নাজিম উদদীন আরো বলেন -আমার মনে হয় আমার আরেক ভাই জানে আলম ও মারা যাবে সেও এখন মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।
মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.