দোহাজারী পিডিবি:লোড বৃদ্ধি ও ইটভাটার অবৈধ সংযোগে কোটি কোটি টাকা হাতাচ্ছে আবাসিক প্রকৌশলী
আবাসিক প্রকৌশলীর দূর্নীতির অন্যতম সহযোগী -লাইনম্যান রমিজ
সৈয়দ আককাস উদদীন সাতকানিয়া
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া দোহাজারী পিডিবি বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ওঠেছে একেরপর এক দূর্নীতির অভিযোগ।
প্রজেক্টের পোল ব্যবসা ও ট্রান্সফরমার স্থানান্তরিত ব্যবসা থেকে শুরু করে মিটার পরিবর্তন ও মিটারের লোড বৃদ্ধির সবকিছুতেই বেপরোয়া দূর্নীতি করে বেড়াচ্ছেন দোহাজারী পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী (আরই)মেহেদী হাসান।
অভিযোগ ওঠেছে, আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান মাত্র এক বছরেই দোহাজারী পিডিবি(বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় কেন্দ্রে)এর দায়িত্বে আসার পর থেকেই কায়সার, জামাল, রমিজ এবং অস্থায়ী কর্মচারী জাকির যাকে পিডিবির অফিসিয়াল ভাষায় বলা হয় বদিআলম।
এই চারজনকে ব্যবহার করে লুটেপুটে খাচ্ছে সরকারি সম্পদ এবং দুই হাতে কামাচ্ছে কাঁচা টাকা।
আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের কাছে কেউ কোন দোকান বাসাবাড়ির জন্য নতুন সংযোগের জন্য আসলে, আগেই মেহেদী হাসান তাকে(গ্রাহককে)বলেন লাইনম্যান রমিজ উদদীনের সাথে দেখা করতে রমিজ উদদীন দেনদরবার করে বড় অংকের টাকা হাতিয়েই মূলত এই নতুন সংযোগ ব্যবস্থা করেন।
শুধু তাই নয় আরেক গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে এই অফিসে অস্থায়ী কর্মচারী যাকে বদিআলম নামে ডাকা হয় সেই জাকিরের বিরুদ্ধে।
জাকির অস্থায়ী কর্মচারী হলেও কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা -জাকির হচ্ছে ইটভাটার অবৈধ সংযোগ থেকে টাকা সংগ্রহকারী এবং বিয়ে মেজবানেও দেয়া হয় এই অফিস থেকে অবৈধ সংযোগ যা নিয়ন্ত্রণ করেন আবাসিক প্রকৌশলীর হয়ে অস্থায়ী কর্মচারী বদিআলম মি: জাকির।
কারো পুরাতন মিটার পাল্টিয়ে প্রিপেইড মিটার লাগাতে হলে গুনতে হয় প্রতি- মিটারে ২/৩হাজার করে।
তবে মিটার লাগানো ও পাল্টানোটা জাকিরের নিয়ন্ত্রণে নেই ওটার নিয়ন্ত্রক লাইনম্যান রমিজ উদদীন।
দোহাজারী পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের ব্যবসা শুধু এখানেই শেষ নয়-এই অফিসের অধীনে সমস্ত এনালগ মিটারের রিডিং চুরি করার জন্য আলাদা খাতও করেছেন তিনি,ওই এনালগ মিটারের রিডিং চুরির খাতের প্রধান বানিয়েছেন অস্থায়ী মিটার রিডার মু:ইউসুপকে।
আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের দূর্নীতির বহুমাত্রিক রূপের আসল চেহারা ভেসে ওঠলেও খোদ কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে বিভাগী ব্যবস্থা নিচ্ছেননা বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
সম্প্রতি ট্রান্সফার চুরির খবর প্রকাশিত হয় প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে, ওই নিউজের সূত্র ধরে ধারাবাহিক অনুসন্ধানে নামলে প্রতিবেদকের হাতে আসতে থাকে একেরপর এক তার দূর্নীতির কথা।
জানা যায়, কেরানী হাটের উত্তর পার্শ্বে ডিবিএম ব্রিকফিল্ডের পূর্বে একটি এরিয়ায় তিন ফ্যাজের একটি ট্রান্সফরমার দিয়েছেন বিশাল অংকের টাকা খেয়ে, পরে ওই ২৫০কেবিএ ট্রান্সফারমারটি চুরিও হয়ে যায় বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র আরো জানিয়ে, ট্রান্সফরমার চুরি হলেও ওই চুরিসংক্রান্ত বিষয়ে তিনি অফিসিয়াল নোট দেননি এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে থানায় কোন ধরনের জিডিও করেননি।
জামাল -কায়সার, ও রমিজ এবং জাকির মিলে আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের পক্ষে উপরোক্ত কাজ সম্পাদন করে যাচ্ছেন নিয়মিত।
এদিকে ডিবিএম ইটভাটার পূর্ব পাশে টিনের ঘরে থ্রী ফ্যাজ ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন,বিষয়টি নজরে এসেছে এই বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।
এদিকে সূত্র প্রতিবেদককে আরো নিশ্চিত করেছেন- আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান দোহাজারী পিডিবির(বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রে) যোগদানের পূর্বে চট্টগ্রামে হালিশহরে ছিলেন এবং হালিশহরে কিছুদিন ওএসডি ছিলেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে দোহাজারী পিডিবির অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক উপসহকারী কর্মকর্তার সূত্রের বরাতে জানা যায়, আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান প্রতিদিন দুপুর ১২টায় অফিসে এসে বিকাল ৩টায় দৈনিক ঘুস ইনকাম গুছিয়ে বিকাল ৩টায় অফিস থেকে বেরিয়ে যান।
অথচ! নিয়মমতো আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসানের কর্মরত উপজেলায় অবশ্যই অবশ্যই অফিসিয়াল টাইমে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।