চলন্ত ট্রাকে উঠে নিরাপত্তাকর্মীকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ১০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লোহা তৈরির কাঁচামাল বোঝাই চলন্ত ট্রাকে উঠে নিরাপত্তাকর্মীকে খুনের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার ১০ জন ট্রাকে উঠে ৩০০ কেজি লোহা লুট ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করলেও নিরাপত্তাকর্মীকে কীভাবে খুন করেছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়নি। এ বিষয়ে জানতে ৯ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত টানা তিনদিন নগরীর পাহাড়তলী, খুলশী, হালিশহর, বন্দর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে আকবর শাহ থানা পুলিশ। গ্রেফতার ১০ জন হল- মো. রকি (২২), রাসেল আখন (২৭), মো. আব্দুল্লাহ (২০), মো. রানা পারভেজ (১৯), মো. ইব্রাহিম শান্ত (২০), আব্দুর রায়হান (১৯), মোহাম্মদ আলী (২০), আব্দুল জলিল (৬২), মজিবুর রহমান রিপন (৩০) এবং মো. সাজ্জাদ (৩০)।

গত ৬ সেপ্টেম্বর সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়িতে আবুল খায়ের গ্রুপের কারখানায় ট্রাক থেকে মালামাল নামানোর সময় ওই ট্রাকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক তরুণের লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছিল, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। নগরীর আকবর শাহ থানার লতিফপুর এলাকায় ট্রাকের গতিরোধ করে সেখান থেকে লোহা লুটের জন্য কয়েকজন যুবক ওঠে। তারাই ওই তরুণকে খুন করে। খুন হওয়া আবুল হাশেম নিরব (১৯) আবুল খায়ের গ্রুপের নিয়োগ দেওয়া নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সানি ট্রেডার্সের কর্মী ছিলেন।

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ১০ জনকে গ্রেফতারের পর আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন  বলেন, ‘১০ জনের মধ্যে আটজন সরাসরি ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বাকি দু’জন লুট করা মালামাল কিনেছে। ওই ট্রাক থেকে লুট করা ৩০০ কেজি লোহার টুকরা আমরা উদ্ধার করেছি। গ্রেফতার রকি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকি ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।’

পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সদরঘাট থেকে পিগ আয়রন নিয়ে আবুল খায়ের গ্রুপের কারখানার উদ্দেশে রওনা দেওয়া ট্রাকটি নগরীর দেওয়ানহাটে ফ্লাইওভারে ওঠার সময় গতি স্তিমিত হলে পারভেজ ও রাসেল সেখানে লাফিয়ে উঠে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া গেছে, সেখানে তাদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীর কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। তারা যখন বস্তায় লোহার টুকরা ভরছিল তখন আবুল হাশেম বাধা দেয়। এসময় তারা হাশেমকে ধাক্কা দিলে সে লোহার মধ্যে পড়ে আঘাত মেয়ে মারা যায় বলে গ্রেফতার হওয়াদের দাবি। তবে পুলিশ বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি।এরপর ট্রাক লতিফপুর এলাকা অতিক্রমের সময় ম্যাক্সিমা হিউম্যান হলার নিয়ে আরও ৬ জন গিয়ে ট্রাক লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মেরে এর গতিরোধ করে। তখন লোহার টুকরা বোঝাই বস্তাসহ পারভেজ ও রাসেল গাড়ি থেকে নেমে যায়

জানতে চাইলে ওসি জহির হোসেন বলেন, ‘আবুল হাশেমকে কীভাবে খুন করা হয়েছে, এটা আমরা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নই। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারব বলে আশা করছি।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.