চট্টগ্রাম কারাগারে হাজতি নির্যাতনে আদালতে মামলা গ্রহণ   

চট্টগ্রাম সংবাদ ডেস্ক

চট্টগ্রাম কারাগারে রূপম কান্তি নাথা নামে এক হাজতিকে বৈদ্যুতিক শক ও বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে জেল সুপার জেলারসহ চারজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে দায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন আদালত। গ্রহণের পর তা উপযুক্ত আদালতে পুনরায় দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার দ্বিতীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসাইন মোহাম্মদ রেজার আদালতে এ আদেশ দেন। এরআগের দিন সোমবার একই আদালতে হাজতির স্ত্রী ঝর্ণা রানী দেবনাথ তার স্বামীকে কারাগারে বৈদ্যুতিক শক ও বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনেন। গতকাল আদালত অভিযোগটি আমলে নিলেও আদেশের জন্য অপেক্ষমান রেখেছিলেন।

আবেদনে সাতকানিয়া উপজেলা কালিয়াইশ ইউনিয়নের মৃত বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্যের ছেলে রতন ভট্টাচার্য, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার, জেলার ও জেলখানার কর্তব্যরত এক সহকারী সার্জনকে বিবাদী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজত মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ এর (১ ও ২) এবং ক, খ , গ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

বাদি পক্ষের আইনজীবী ভুলন লাল ভৌমিক বলেন, ‘আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ফৌজlদারি কার্যবিধির ২০১ ধারা মোতাবেক উপযুক্ত আদালতে দাখিল করতে বলেছেন। এরমানে হলো মামলাটি খারিজ হয়নি তবে উচ্চ আদালত অর্থ্যাৎ দায়রা জজ আদালতে দাখিল করতে হবে।’

ঝর্ণা রানী দেবনাথ আদালতে দাখিল করা অভিযোগে দাবি করেন, গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর তার স্বামী ভিকটিম রূপম কান্তি নাথ জিআর ৩৩২/১৮ নম্বর মামলায় সুস্থ অবস্থায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। ভিকটিম থেকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে সম্মতি আদায়ের জন্য অভিযুক্ত বিবাদীরা পরস্পরের যোগসাজসে চট্টগ্রামের কারাগারের সাঙ্গু ১ নম্বর ভবনে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ ও ২৫ তারিখের যেকোন সময় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বৈদ্যুতিক শক ও বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে কারাবন্দি রূপম কান্তি নাথকে হত্যা চেষ্টা করা হয়।

এমন সংবাদ পেয়ে স্ত্রীর পক্ষে রূপমের আইনজীবী তার সঙ্গে দেখা করেন। পরে হাজতি রূপমকে উন্নত চিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে মহানগর জজ আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী। আদালত আবেদন মঞ্জুর করলে ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের এমএক্স ১২ নম্বর বেডে ভর্তি করানো হয়। এ ঘটনার পর বাদি ঝর্ণা হাসপাতাল পরিচালকের কাছে আলামত সংগ্রহ করে রাখতে আবেদনও করেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কারা কর্তৃপক্ষের তত্ববধায়নে চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের এমএক্স ১২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন ভিকটিম রূপন কান্তিনাথের মুখ, হাতসহ সারা গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার অন্ডকোষে আগুনের ছ্যাঁকা দেয়ার মতো চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুরো অন্ডকোষ, পুরুষাঙ্গসহ বিভিন্ন স্থান আগুনে ঝলসে গিয়ে মাংসপিণ্ড খসে পড়ার মতো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া রোগীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.