শিক্ষার্থীদের দেওয়া আশ্বাস ‘রাখেনি’ চবি প্রশাসন

চবি প্রতিনিধি

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চলমান সকল পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইদিন পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে চবি প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিলেন পরের সোমবারে পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি চবি প্রশাসন। আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন তাদের সঙ্গে প্রহসন করেছেন। আন্দোলন থামাতেই তাদেরকে ‘মিথ্যা’ আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রশাসন এই বিষয়টি আর মাথা ঘামায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আমরা সোমবারের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত জানাব বলছিলাম । কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এরপর আর যোগাযোগ করেনি, আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই আগের সিদ্ধান্ত অর্থাৎ পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে।’

এরআগে চবির অসমাপ্ত পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনার পরিচালক অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ শিক্ষামন্ত্রীকে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার সুপারিশ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বরাবর প্রেরণ করেন। আবেদনপত্রে সিরাজ উদ দৌল্লাহ উল্লেখ করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের সন্তান। করোনা মহামারীর কারণে অধিকাংশ অভিভাবক আর্থিক সংকটের সম্মুখীন। করোনার প্রভাব শিক্ষার্থীর ওপর সুস্পষ্ট। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থগিত পরীক্ষা শুরু হয়েছিল।’

তার এ চিঠি নিয়েও চলে ক্যাম্পাসে মিশ্র সমালোচনা। কেউ কেউ শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের পক্ষে দাঁড়ানোকে পিতা-সন্তানের ভূমিকা হিসেবে মূল্যায়ন করছে। আবার কেউ কেউ বলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উর্ধ্বতন দায়িত্বে থেকে তিনি কেন কাউকে অনুরোধ করবেন? তিনি নিজেতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কয়েকজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিভাগীয় সভাপতি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বে তিনি কেন কাউকে অনুরোধ করবেন। নিজেকে প্রচার করার জন্য তিনি এই চিঠি দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অনেক কষ্ট করে পরীক্ষা দিতে আসছিল। আমরাও তাদের সেশনজটের বিষয় চিন্তা করে দ্রুত পরীক্ষা নিচ্ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিৎ এই ধরণের প্রহসন বন্ধ করে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.